দেশজুড়ে ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে নয় দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ থেকে লংমার্চ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্বোধনী সমাবেশের মাধ্যমে এ লংমার্চ শুরু হয়।
দুই দিনব্যাপী এ লংমার্চ শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তান, চাষাড়া, সোনারগাঁও, চান্দিনা, কুমিল্লা, ফেনী, দাগনভুঞা, চৌমুহনী, নোয়াখালীর একলাসপুর হয়ে মাইজদীতে পৌঁছে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে টানা ১৪ দিন ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়।
লংমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রিপন চাকমা, সিপিবি নেত্রী লুনা নুর, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা।
নয় দফা হলো: সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতার সঙ্গে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে, পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সব প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে, হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে, ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রেণে বিটিসিএল এর কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে, তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে, ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫(৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে, পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে, গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।