ধর্ষণ জঘন্য অপরাধ হলেও তা প্রতিরোধে মৃত্যুদণ্ড কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মিশেল ব্যাচলেট বলেন, ধর্ষণ বড় ধরনের একটি অপরাধ। এটা প্রতিরোধে আইনের শাসন, অপরাধের দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তবে মৃত্যুদণ্ড কোনো সমাধান নয়।
সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে তুলে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আরেক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সারাদেশে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ, মতিঝিল, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি ওঠে।
এরই প্রেক্ষাপটে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অধ্যাদেশে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় এটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনে পরিণত হলো। এখন নিয়ম অনুযায়ী, সংসদ অধিবেশন শুরু হলে এটি আইন আকারে পাস হবে।
ধর্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আইন পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করে মিশেল ব্যাচলেট বলেন, মৃত্যুদণ্ডের নেপথ্যে যুক্তি হলো যে, এটা ধর্ষণের মাত্রা কমিয়ে আনবে। কিন্তু এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, অন্যান্য শাস্তির তুলনায় মৃত্যুদণ্ড কোনো অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনতে পেরেছে।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বিশ্বব্যাপী সরকারগুলোকে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে তাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দ্রুত অপরাধের তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মিশেল বলেন, সম্প্রতি আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, মরোক্কো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তিউনিসিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের অসংখ্য রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ যথাযথভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যৌন নিপীড়ন রোধের প্রতিকার এবং বিচারের দাবি জানিয়েছেন।