জাতীয় সংসদের দুই শূন্য আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হয়। এতে নৌকা প্রতীক নিয়ে ঢাকায় বিজয়ী হয়েছেন কাজী মনিরুল ইসলাম ও নওগাঁয় আনোয়ার হোসেন (হেলাল)।
তবে বিএনপির দুই প্রার্থীর একজন ভোট শেষ হওয়ার আগেই বর্জনের ঘোষণা দেন এবং আরেকজন সন্ধ্যার পরে ফল প্রত্যাখ্যান করেন। এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। কোথাও কোনো বড় ধরনের গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। দুই আসনের সবক’টি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হয়। এর মধ্যে নওগাঁয় ভোটার উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৩৫ ভাগ। আর ঢাকায় উপস্থিতির হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
নির্বাচন শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ভোটে কোথাও কোনো অসুবিধা হয়নি। ইসির কাছে কোনো অভিযোগ নেই। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, উপনির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ সবসময়ই কম থাকে। পাশাপাশি করোনার কারণে মানুষ এখন আতঙ্কিত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১৮৭টি। এর মধ্যে ১৭২ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কাজী মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪২ হাজার ৮১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সালাহউদ্দিন আহম্মেদ পেয়েছেন দুই হাজার ৭৮৭ ভোট। সন্ধ্যার পরই অবশ্য তিনি নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন। এই আসনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮০ ভাগ।
এই আসনে আরও প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির মীর আব্দুর সবুর, গণফ্রন্টের এইচ এম ইব্রাহিম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আনছার রহমান শিকদার ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আরিফুর রহমান। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল চার লাখ ৭১ হাজার ১২৯ জন।
এদিকে নওগাঁ প্রতিনিধি ও রানীনগর সংবাদদাতা জানান, নওগাঁ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন হেলাল নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৬৬৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শেখ রেজাউল ইসলাম পেয়েছেন চার হাজার ৬০৫ ভোট। ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৩৫ ভাগ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১০৪ কেন্দ্রের মধ্যে আরও ১৫ কেন্দ্রের ফল এসে পৌঁছায়নি। তবে বাকি কেন্দ্রের উপস্থিত সব ভোট বিএনপি প্রার্থী পেলেও নৌকা প্রার্থীর জয় নিশ্চিত।
এই আসনে আরও একজন প্রার্থী ছিলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির খন্দকার ইন্তেখাব আলম। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ছয় হাজার ৭২৫ জন। ভোট চলাকালে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। রোববার অর্ধদিবস হরতালেরও ডাক দেন তিনি।
গত ৩ সেপ্টেম্বর এ দুটি আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ৬ মে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে ঢাকা-৫ আসন এবং গত ২৭ জুলাই এমপি ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে নওগাঁ-৬ আসন শূন্য হয়।