দুইপক্ষ হয়ে পরস্পর পাল্টাপাল্টা বহিষ্কারের হুমকি দেয়ার মধ্যে অবশেষে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম থেকে বহিষ্কার হলেন মোস্তফা মহসিন মন্টু ও অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ আটজন নেতা।
দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাদেরকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। কিন্তু এবার তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এই বহিষ্কারের পাশাপাশি ১২ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয়।
বহিষ্কৃত অন্য নেতারা হলেন- সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, হেলালউদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আবদুল হাসিব চৌধুরী। এদের মধ্যে হেলাল, লতিফুল, সিদ্দিকুর ও হাসিব চৌধুরীকে আগে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।
গণফোরামের সদস্য মোশতাক আহমদ সভার লিখিত সিদ্ধান্ত পড়ে শুনান। এতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বাস্তবতায় সংগঠনকে শক্তিশালী, গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আগামী ১২ ডিসেম্বর শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দলীয় শৃঙ্খলভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে পাঠানো শোকজ নোটিসের জবাব না দেয়ায় মন্টু, সাইয়িদ, সুব্রত ও জগলুলকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মহানগর গণফোরামের হারুন তালুকদার এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। তবে সভার অন্য সবাই হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান। পরে সভার সভাপতি এমপি মোকাব্বির খান বলেন, একজন সমর্থন করেনি। বাকিরা হাততালি দিয়ে এসব সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। ফলে এসব সিদ্ধান্ত পাস হল।
তিনি বলেন, সভায় যেসব বক্তব্য এসেছে তাতে যে স্পিরিট উঠে এসেছে সেটা হল- যারা দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত মানেন না, যারা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কথা শুনেন না। এই অবস্থায় একটি সংগঠন চলতে পারে না। প্রতিটি দলেই একটা ডিসিপ্লিন থাকে, তার একটা গঠনতন্ত্র থাকে, সবাইকে সেই গঠনতন্ত্র মেনে চলতে হয়। আজ যেভাবে গণফোরামকে নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন, গণফোরামকে নিয়ে একটা খেলায় মেতে উঠেছে। সেটা মেনে নেয়া যায় না।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এক দলকে ছেড়ে আরেক দল করা বা অন্য দলে চলে যাওয়া গণফোরামে এটা অনেক হয়েছে। কিন্তু দলকে ছেড়ে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করাটা এটা একটু অন্যরকম ব্যাপার। যারা এটা করছে ভাগ্য ভালো যে আমরা তাদেরকে চিনতে পেরেছি। চিনতে পারার সুযোগটা তারাই আমাদেরকে দিয়েছে। তারা যে কী প্রকৃতির মানুষ, আমরা সবাই এখন আন্দাজ করতে পারছি, এটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।