এক নজরে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের বর্ণাঢ্য জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক
ফাইল ছবি

না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতাল মারা যান দেশবরেণ্য এই আইনজীবী। তবে রেখে গেলেন বর্ণাঢ্য একজীবনের স্মৃতিগাঁথা।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মুমিন উল হক।

universel cardiac hospital

১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ১৯৫৮ সালে এলএলবি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে ব্যারিস্টার (বার-এট-ল) ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর ১৯৬২ সালে লিংকনস ইন-এ ডাক পান।

রফিক-উল হক ১৯৬০ সালে কলকাতা উচ্চ আদালতে আইনজীবী হিসেবে বারের সদস্য হন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা উচ্চ আদালতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে ভর্তি হন।

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন তিনি। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশের ষষ্ঠ অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিযুক্ত হন। একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ছিলেন তিনি।

২০০৬-০৮ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কটের সময় তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অভিযোগ আনা হয়। ওইসময় তিনি তাদের দু’জনের পরামর্শক হলে দেশব্যাপী প্রশংসিত হন।

২০১১ সালে স্ত্রী ডা. ফরিদা হককে হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন দেশবরেণ্য এই আইনজীবী। এরপর থেকে তার ব্যক্তিগত ড্রাইভারই তার দেখাশোনা করেন।

২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে পায়ে ব্যথা হওয়ায় সে কারণে হুইলচেয়ারে যাওয়া-আসা করতেন। পুরানা পল্টনের ছায়াশীতল, নিরিবিলি বাড়িতেই থাকতেন বেশিরভাগ সময়। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া আদালতেও তেমন যাননি।

রক্ত শূন্যতা ও প্রস্রাবের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেখা দিলে গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রখ্যাত এই আইনজীবীকে। অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত আদ-দ্বীন হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

গত ১৭ অক্টোবর কিছুটা সুস্থবোধ করলে সকালের দিকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। এরপরে দুপুরের পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎিসাধীন অবস্থায় আজ সকালে না ফেরার দেশে চলে যান দেশবরেণ্য এই আইনজীবী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে