দিনভর চেষ্টা করেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে আজ শনিবার পদ্মা সেতুতে বসানো যায়নি ৩৪তম স্প্যান “টু-এ”। স্প্যানটি আগামীকাল রোববার সকালে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর স্প্যানটি বসবে।
শনিবার বিকালে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়া মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বেলা ১১টায় কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ভাসমান ক্রেণের সাহায্য নির্ধারিত পিয়ারে অভিমুখে রওনা হওয়ার কথা ছিলো। তবে বৈরী আবহাওয়া ও ঝড়ো বাতাসের কারণে পরবর্তীতে বেলা ১টায় ও ২টায় দুই দফা সময় নির্ধারণ করা করা হয়। কিন্তু আরও দেড় ঘণ্টা বিলম্বে দুপুর সাড়ে ৩টায় রওনা হয়ে সাড়ে ৪টায় স্প্যানবাহী ক্রেনটি পিয়ারের কাছে পৌঁছে। এরপর বেলা ৫টায় ক্রেনটি নোঙর করা হলেও ঝড়ো বাতাসের কারণে স্প্যানটি ওপরে তোলা যায়নি। পরে বিকাল ৫টা বেজে যাওয়ায় স্প্যান বসানোর কাজ এদিনের মতো বন্ধ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে স্প্যানটি বসানো হবে। স্প্যানটি বসে গেলে দৃশ্যমান হবে সেতুর পাঁচ হাজার ১০০ মিটার অর্থাৎ পাঁচ দশমিক এক কিলোমিটার অংশ।
জানা গেছে, ৩৪তম স্প্যানের পরে আগামী ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিলারের ওপর ৩৫তম স্প্যান ও নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর আগামী ১০ডিসেম্বরের মধ্যে সকল স্প্যান বাসানোর নির্দেশনা রয়েছে সেতু সচিবের।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৩টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৯শ ৫০মিটার মিটার অংশ।
৪২টি পিলারের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।