মাদক ও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের ছেলে ডিএসসিসির কাউন্সিলর ইরফান মো. সেলিম ও তার দেহরক্ষীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
হাজী সেলিমের সোয়ারিঘাটের বাড়িতে অভিযান শেষে সোমবার সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে র্যাবের মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন।
আশিক বিল্লাহ জানান, অভিযানে ৪০০ পিস ইয়াবা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে এমন ওয়াকিটকিও উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পেরেছে, এসব ওয়াকিটকি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের জন্য রাখা হতো।
পরে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ইরফান মো. সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে মাদকের জন্য ছয়মাস ও অবৈধ অস্ত্রের জন্য ছয় মাস করে এক বছর কারাদণ্ড দেন। এসব ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এর আগে অভিযানকালে ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, সেলিমের বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে। আগ্নেয়াস্ত্রের কোনো লাইসেন্স নেই। আর ওয়াকিটকিগুলোও অবৈধ, কালো রঙের এসব ওয়াকিটকি শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করতে পারেন।
রোববার রাতে রাজধানীর কলাবাগানে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খানের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। এরপর ওই গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে এসে ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। নৌবাহিনী কর্মকর্তা নিজের পরিচয় দেয়ার পরও তাকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া সঙ্গে থাকা তার স্ত্রীকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সেই মামলায় এর আগে গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের এই মামলায় সাংসদের ছেলেসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, প্রোটকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমান।
মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশ্যে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়া।
পরে সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার চকবাজারের দেবীদাস ঘাট লেন এলাকায় হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে এরফানকে আটক করে র্যাব-১০।