পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি গ্রামের রোপা আমন ও শীতকালীন সবজি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, শনিবার রাতে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর মোহাম্মদ উল্যাহর বাড়ির পার্শ্ববর্তী মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০-৬০ ফুট ভেঙে গেছে। একইসঙ্গে উত্তর দৌলতপুরে কহুয়া নদীর বাঁধও ভেঙে গেছে।
এতে ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে উপজেলা সদরের মূল সড়ক তলিয়ে গেছে। পানির প্রবল চাপে মধ্যরাতে কহুয়া নদীর দৌলতপুর অংশেও বাঁধে ভাঙন ধরে। এতে উত্তর দৌলতপুর, দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়া গ্রামের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়।
এছাড়াও পানিবন্দি হয়েছে কয়েকশ পরিবার, ডুবে গেছে জমির ফসল, রাস্তাঘাট ও মুরগির খামার। ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ। কৃষকরা পানিতে ডুবে থাকা ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর ইসলাম জানান, নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের আশঙ্কা দেখে শনিবার দুপুরে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয়রা ভাঙন ঠেকাতে বালির বস্তা তৈরি করে রেখেছিলেন। রাত ১২টার দিকে ভাঙন দেখা দিলে ৫০-৬০টি বস্তা ফেললেও পানির তোড়ে ভাঙন ঠেকানো যায়নি।
ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৬ হাজার ২শ হেক্টর জমির রোপা আমন ও ৪০ হেক্টর শীতকালীন সবজির খেত আবাদ হয়েছে। সদর ইউনিয়নের ঘনিয়মোড়া ব্লকে ৪২০ হেক্টর রোপা আমন হয়েছে। এর মধ্যে ১০৫ হেক্টর রোপা পানিতে ডুবে আছে। ১৩.৫ হেক্টরের মধ্যে ৬ হেক্টর সবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আক্তার হোসেন জানান, রোববার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বাঁধে ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাত থেকেই পানি ৭০ সেন্টিমিটারে ওপরে ডেঞ্জার লেবেলে রয়েছে। আর কোনো বাঁধ যাতে না ভাঙে সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছেন।
এর আগে গত ১২ জুলাই মাসে ৭-৮টি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছিল। তখন ২০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।