মাঠে খেলেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে টিভির পর্দায় ম্যাচটির দিকে সজাগ দৃষ্টি ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। কেননা এ ম্যাচের ফলাফলের ওপরেই নির্ভর করছিল তাদের প্লে-অফ ভাগ্য। শেষপর্যন্ত ভাগ্য তাদের দিকে মুখ ফিরে তাকায়নি, টিভির পর্দায় প্রিয় দলের বিদায় নিশ্চিত হওয়াটাই দেখেছে কলকাতার ভক্ত-সমর্থকরা।
সমীকরণটা সহজ ছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জন্য। নেট রানরেট বেশ ভালো, ১৩ ম্যাচে আছে ১২ পয়েন্ট। ফলে শেষ ম্যাচ জিতলেই পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় দল হয়ে পাওয়া যাবে প্লে-অফের টিকিট। আর হারলে বিদায় নিশ্চিত, সেক্ষেত্রে সেরা চারে পৌঁছে যাবে কলকাতা।
এমন যখন পরিস্থিতি, তখনই যেন নিজেদের সেরা ম্যাচটা খেলল হায়দরাবাদ। রীতিমতো উড়িয়ে দিলো টেবিল টপার মুম্বাইকে, সোজা ১০ উইকেটে জিতে নিয়েছে ম্যাচ। মুম্বাইয়ের করা ১৪৯ রান টপকে যেতে কোনো উইকেট হারায়নি হায়দরাবাদ, উল্টো বল বাকি ছিল ১৭টি।
আইপিএল ইতিহাসে দশ উইকেটে জয়ের এটি ১৪তম ঘটনা। হায়দরাবাদের জন্য এত বড় জয়ের স্বাদ পাওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা এটি। ২০১৬ সালের আসরে গুজরাট লায়নসের বিপক্ষে ১০ উইকেটে জিতেছিল তারা। মুম্বাইয়ের জন্য দশ উইকেটে হারের তৃতীয় ঘটনা এটি। ২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটে কোনো ম্যাচ হারল তারা।
হায়দরাবাদের এত বড় জয়ের ম্যাচ দিয়েই শেষ হলো আইপিএলের প্রথম পর্বের ৫৬ ম্যাচ। সব দলের ১৪টি করে ম্যাচ শেষে সেরা চার দল হয়ে প্লে-অফে নাম লেখানো দলগুলো হলো যথাক্রমে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, দিল্লি ক্যাপিট্যালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু।
মুম্বাইয়ের করা ১৫০ রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ঋদ্ধিমান সাহার ১৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে হায়দরাবাদ। অধিনায়ক ওয়ার্নার ৫৮ বলে ৮৫ ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ঋদ্ধির ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংস।
এই ইনিংসের মাধ্যমে আইপিএলে নিজের টানা ষষ্ঠ আসরে পাচশ’র ওপরে রান করার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন ওয়ার্নার। যা নেই বিশ্বের আর কোনো ব্যাটসম্যানের। এছাড়া এ নিয়ে ২৩তমবারের মতো কোনো শতরানের জুটি গড়লেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গই দিয়েছেন ঋদ্ধি। যা হায়দরাবাদকে এনে দিয়েছে প্লে-অফের টিকিট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রোহিত শর্মাকে (৪) হারায় মুম্বাই। তবে কুইন্টন ডি কক আর সূর্যকুমার যাদবের ঝড়ো ব্যাটে একটা সময় মোটামুটি ভালো অবস্থানে ছিল দলটি।
ডি কক ১৩ বলে ২৫ রানে আউট হলেও চালিয়ে যাচ্ছিলেন সূর্য। ১১ ওভার শেষে মুম্বাইয়ের বোর্ডে ছিল ২ উইকেটে ৮১ রান। কিন্তু সূর্য ২৯ বলে ৩৬ করে ফেরার পরই বড় ধাক্কা খায় দলটি।
১ রান তুলতে মুম্বাই হারায় আরও ৩ উইকেট। সেই বিপদের মুখে ধরে খেলতে থাকেন ঈষাণ কিশান। দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন দেখেশুনে। শেষতক ১৭তম ওভারে এসে আউট হন ৩০ বলে ৩৩ করা এই ব্যাটসম্যান।
পরের সময়টায় কাইরন পোলার্ড বলতে গেলে একাই খেলেছেন। ইনিংসের শেষ ওভারে জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ঝড়ো ৪১ রান করে দিয়ে যান ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। ২৫ বলের যে ইনিংসে ২ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কায় হাঁকান তিনি।
সানরাইজার্স বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল সন্দ্বীপ শর্মা। ৩৪ রানে ৩টি উইকেট নেন এই পেসার। ২টি করে উইকেট নেন জেসন হোল্ডার আর শাহবাজ নাদিম।