ফেসবুকের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কাছেও মুখ পুড়ল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ভোটগণনা নিয়ে একের পর এক মিথ্যাভাষণের অভিযোগে ট্রাম্পের ভাষণের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করে দিল সে দেশের একাধিক টিভি চ্যানেল।
ভোটের পর বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে প্রথম বার জনসমক্ষে আসেন ট্রাম্প। সেখান থেকেই রিপাবলিকান সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। তবে সেই ভাষণ শুরু হতে না হতেই তার সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় এবিসি, সিবিএস এবং এনবিসি-র মতো আমেরিকার প্রথম সারির টিভি নেটওয়ার্ক।
ভাষণের মাঝেই ওই চ্যানেলগুলোর সঞ্চালক সরাসরি ট্রাম্পের ভাষণকে ‘মিথ্যা’ বলে আখ্যা দেন। ভোটগণনায় ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চললেও নিজের ১৭ মিনিটের সংক্ষিপ্ত অথচ উত্তেজক ভাষণে ভোটচুরির মতো অভিযোগ করেন ট্রাম্প।
এমনকি, আইনিভাবে ভোটগণনা হলে তিনিই যে জিতছেন, সে দাবিও করেন তিনি। রিপাবলিকানদের থেকে ভোটচুরির জন্য ডেমোক্র্যাটরা যে বেআইনি পথ নিয়েছেন, সে অভিযোগও শোনা যায় ট্রাম্পের মুখে। তবে প্রেসিডেন্টের এই ভাষণ যে পুরোপুরি মিথ্যা এবং কোনও তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করে করা নয়, তা সাফ জানিয়েছেন আমেরিকার একাধিক টিভি চ্যানেলের সঞ্চালক।
ট্রাম্পের ভাষণের সম্প্রচার বন্ধের আগে দর্শকদের উদ্দেশে এমএসএনবিসি চ্যানেলের সঞ্চালক ব্রায়ান উইলিয়ামস বলেন, “ওকে, আমরা এমন এক অদ্ভুত অবস্থায় পড়েছি যখন শুধুমাত্র আমেরিকার প্রেসিডেন্টের (ভাষণের) সম্প্রচার বন্ধ করতে হচ্ছে না, তাকে শুধরেও দিতে হচ্ছে।”
এর পরেই ওই সম্প্রচার মাঝপথেই বন্ধ করে দেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। যদিও সে সময় ভিউয়ারশিপের নিরিখে সবচেয়ে বেশি দর্শক টানছিল ওই চ্যানেলগুলো। এমএসএনবিসি বা সিবিএস-এর মতো চ্যানেলে ট্রাম্পের ভাষণ বন্ধের মুখে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ফক্স নিউজ বা সিএনএন-এ তা বন্ধ করেনি।
যদিও প্রেসিডেন্টের ভাষণ নিয়ে আক্ষেপ করতে শোনা গেছে সিএনএন-এর সঞ্চালকের মুখে। বিরোধীদের ভোটচুরির প্রসঙ্গে ওই চ্যানেলের সঞ্চালক জেক ট্যাপার বলেন, আমেরিকার পক্ষে কী দুঃখজনক রাত, যখন তাদের প্রেসিডেন্ট এ কথা (ভোটচুরির) বলেন। অন্যদের বিরুদ্ধে ভোটচুরির মিথ্যে অভিযোগ আনেন।
এখানেই থামেননি জেক। তার মন্তব্য, কোনো প্রমাণ নেই। তবুও ভোটচুরি করা নিয়ে একের পর এক একের পর এক মিথ্যা বলেই চলেছেন (ট্রাম্প)। শুধুমাত্র কালিমা লেপন করা।” টিভি নেটওয়ার্কগুলোর কাছে ‘ধাক্কা’ খাওয়ার আগে ফেসবুকের কাছ থেকেই হুঁশিয়ারি পেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ভোটগণনা চলাকালীন জেতার দাবি করায় তার টুইটে সতর্কীকরণের নোটিফিকেশন দেয় ফেসবুক। তবে সে সময় ট্রাম্পের মতো একই দাবি করায় বাইডেনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। যদিও এ যাত্রায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেন নন, অস্বস্তিতে পড়েছেন স্বয়ং ট্রাম্প!
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।