কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপির গুলিতে এক বাংলাদেশি জেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বরইতলী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে মুহাম্মদ ইসলাম (৩৫)।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার টেকনাফ স্থলবন্দরসংলগ্ন জালিয়ার দ্বীপের পাশে নাফ নদের মিয়ানমার সীমান্তে কয়েকজন জেলে মাছ ধরতে গেলে বিজিপির গুলিতে আহত হন মোহাম্মদ ইসলাম।
মুহাম্মদ ইসলামের ভাই কোরবান আলী জানান, আমার ভাইসহ তিনজন জেলে নদীতে মাছ শিকারে গেলে সেখানে আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নদী থেকে অক্ষত ফিরে আসা আবু বক্কর ও শফি উল্লাহ প্রকাশ শবুল্লাহ জানান, নাফ নদে নৌকা নিয়ে বিচরণ দেখে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি সদস্যরা জেলেদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তাদের ছোড়া গুলিতে মোহাম্মদ ইসলাম পেটে গুলিবিদ্ধ হয়।
এরপর তার সঙ্গী অন্য জেলেরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত আটটার দিকে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য সহকারী ইসকান্দর মির্জা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় তারা বেকার হয়ে পড়েন। এতে ছোট ছোট শিশুরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। তাই একটি ডেঙ্গি নৌকায় করে তিন জেলে মাছ শিকারে যান।
জেলেরা বলেন, সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপ নামক জায়গায় হঠাৎ করে মিয়ানমার জলসীমানা থেকে আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আমাদের একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আমরা কোনোমতে উপকূলে ফিরে এসে প্রাণে বাঁচি।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক ফয়সাল হাসান খাঁন বলেন, নাফ নদে জেলেদের মাছ শিকার নিষিদ্ধ। তার পরও স্থানীয় জেলেরা কেন বা কীভাবে নাফ নদে যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।