সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে ১৭ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনালে উঠেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদার বোলিং জাদুর ওপর ভর করে প্রথমবারের মতো আইপিএলের ফাইনালে উঠার স্বাদ পেল দিল্লি।
রবিবার দিবাগত রাতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে তিন উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দিল্লি। জবাবে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করেও ১৭ রানের ব্যবধানে হেরে যায় হায়দ্রাবাদকে। ফলে প্রতিবার ভগ্ন হৃদয়ে আসর ছাড়ার কষ্ট এবার অন্তত দূর হলো দিল্লির।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওয়ার্নারের (২) উইকেট হারায় হায়দরাবাদ। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনারকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান দিল্লির পেসার রাবাদা। এরপর মনিশ পান্ডেকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় থাকা আরেক ওপেনার প্রিয়াম গার্গকে (১৭) বোল্ড করে ফেরার রাস্তা দেখান দিল্লির অজি পেসার মার্কাস স্টয়নিস। গার্গের বিদায়ের ওভারেই পান্ডেও (২১) বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ।
চাপে পড়ে যাওয়া হায়দরাবাদকে পথ দেখানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন কেন উইলিয়ামসন। আগের ম্যাচের নায়ক এদিনও ব্যাট হাতে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু তাকে একা রেখে আক্সার প্যাটেলের শিকার হন ক্যারিবীয় বিধ্বংসী অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার (১১)। এরপর আবদুল সামাদকে নিয়ে ৫৭ রান যোগ করেন উইলিয়ামসন। দলকে জয়ের পথ দেখাতে থাকা এই কিউই অধিনায়ককে (৬৭) ফিরিয়ে দিল্লি শিবিরে স্বস্তি ফেরান রাবাদা।
প্রোটিয়া পেসার রাবাদার আসল ম্যাজিক দেখা যায় ইনিংসের ১৯তম ওভারে। ক্রিজে ১৪ বলে ২৭ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন সামাদ। কিন্তু বোলিংয়ে এসে সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেন রাবাদা। যদিও তার করা ওভারের দ্বিতীয় বলেই বিশাল ছক্কা মারেন সামাদ, কিন্তু পরের বলেই তুলে মারতে গিয়ে লং অনে থাকা বদলি খেলোয়াড় কিমো পলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। এর পরের বলেই রশিদ খানকে আক্সারের হাতে ক্যাচ বানান রাবাদা। হ্যাটট্রিকের সামনে থাকা রাবাদা তৃতীয় বলটি বাউন্স দিলে ওয়াইডের ইশারা করেন আম্পায়ার।
এরপর শ্রীভাতস গোস্বামীকে স্টয়নিসের হাতে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করে চতু্র্থ উইকেট তুলে নেন রাবাদা। ইনিংসের শেষ ওভারে মাত্র ৪ তুলতে পারে হায়দরাবাদ।
এর আগে স্টয়নিস ও শেখর ধাওয়ান মিলে দিল্লিকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। দুজনে মিলে ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৮৬ রান। স্টয়নিস ২৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে রশিদ খানের বলে বোল্ড হলেও ধাওয়ান স্ট্রোকের ফুলঝুরিতে ফিফটি তুলে নেন। অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ২১ রান করে বিদায় নিলেও শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে রানের চাকা চালু রাখেন ধাওয়ান। দুজনে যোগ করেন ৫২ রান।
সদ্বীপ শর্মার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে ৫০ বলে ৭৮ রানের ইনিংস আসে ধাওয়ানের ব্যাট থেকে। ভারতীয় বাঁহাতি ওপেনার ইনিংসটি সাজান ৬ চার ও ২ ছক্কায়। শেষদিকে ঝড় তোলা হেটমায়ার ২২ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন।
ব্যাট হাতে ৩৮ রান ও বল হাতে ৩ উইকেট তুলে নেওয়া স্টয়নিস ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।
সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ফাইনালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি হবে দিল্লি।