ভারতের বিহার রাজ্যে বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ভোটের ফলাফলে উদীয়মান মুসলিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন এককভাবে ৫টি আসনে জয় লাভ করে।
বিবিসি জানিয়েছে, বিহারে এই প্রথমবারের মতো ভোটে লড়ে মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন। মুসলিম-অধ্যুষিত সীমাঞ্চল ও আশপাশে ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে পাঁচটিই জিতে নিয়েছে ওয়াইসির দল।
বর্তমানে মহারাষ্ট্র থেকেও তাদের নির্বাচিত এমপি ও এমএলএ রয়েছে। আসাদউদ্দিন ওয়াইসির পরবর্তী টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। ছয় মাস পর পশ্চিমবাংলায় বিধানসভার ভোট।
তবে দলের এই সাফল্যে ওয়াইসি বলেন, এটা আমাদের দলের জন্য খুব ভালো দিন। বিহারের মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। তাদের কীভাবে ধন্যবাদ দেব জানি না।
দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা কী হবে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা মানুষের কাজ করব। বিহারের বন্যাপীড়িত এলাকার দিকে নজর দেব। তবে আরও আসন কেন জেতা গেল না তা নিয়ে দলের মধ্যে কাটাছেঁড়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিন তালাক রদ করার বিরোধিতা থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদ ভাঙার ইস্যু বা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ওয়াইসি যেভাবে সরব হয়েছেন, তাতে ভারতীয় মুসলিম সমাজের একটা বড় অংশ তাকে সেদেশে মুসলিমদের ‘নতুন নেতার’ ভূমিকায় দেখতে শুরু করছেন।
বস্তুত প্রায় ৯৩ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রভাব মাত্র বছরকয়েক আগেও হায়দ্রাবাদ শহরের গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
এদিকে বিহারের নির্বাচনে অভাবিত সাফল্য পাওয়ার পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে আবার বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
কংগ্রেসের নেতারা সরাসরি বলছেন, ওয়াইসির দল মুসলিম ভোট কেটেছে বলেই বিজেপি জোট বিহারে আবার ক্ষমতায় আসতে পারল।
বিহারের সাফল্যের পর তিনি বলেন, আমার ইতিহাস মানুষ জানে না। বারো-তেরো বছর বয়স থেকে শুনছি আমাদের বাড়ির সামনে এসে আরএসএস গুন্ডারা নোংরা স্লোগান দিচ্ছে, ওয়াইসি কবরে যাও কিংবা পাকিস্তানে। ভেতর থেকে এটা আমায় আরও শক্ত করে তুলেছে, প্রতিবাদ করে জেলে গিয়ে পুলিশের মারও খেয়েছি।
ওয়াইসি বলেন, কোনও শিসমহল থেকে আমি রাজনীতিতে আসিনি, কেউ আমার জন্য মখমলের কার্পেটও বিছিয়ে রাখেনি। ফলে কে কী বলল আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আর ভোট-কাটুয়া বা বি-টিম পুরনো হয়ে গেছে – অক্সফোর্ড অভিধান ঘেঁটে বরং নতুন গালাগালি খুঁজতে বলব।