জীবন-সুফিলের গোলে পাঁচ বছর পর নেপালকে হারালো বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশ

সর্বশেষ জয়টি ছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায়। সেটিও ছিল ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। মাঝে সাফ ফুটবল ও এসএ গেমস ফুটবলে টানা হারের পর হিমালয়ের দেশটির বিপক্ষে অবশেষে জয় এলো। জীবন-সুফিলের গোলে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর নেপালের বিপক্ষে জয় পেলো বাংলাদেশ।

মিডফিল্ড থেকে সোহেল রানার নিখুঁত থ্রু পাস ধরে মাহবুবুর রহমান সুফিল এগিয়ে যাচ্ছিলেন। গোল তখনও অনেকদূরের পথ। সুফিল বাম প্রান্ত দিয়ে দৌড়ে ঢুকে পড়লেন বক্সে, এরপর শরীর বাঁকিয়ে নিজেই নিলেন আড়াআড়ি শট। দূরের পোস্টে বল জালে জড়াতেই জার্সিখোলা উদযাপনে মাতলেন সুফিল। ৭৯ মিনিটের ওই গোলেই জয় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। এর আগে নাবিব নেওয়াজ জীবনের প্রথমার্ধের গোল ছন্দ তুলে দিয়েছিল বাংলাদেশের খেলায়। আট মাস পর ফুটবলে ফেরাটা বাংলাদেশের জন্য হলো তাই মনের রাখার মতোই। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

করোনাকালীন বিরতিতে ধারে ভারে কমে যায়নি বাংলাদেশ, ম্যাচের শুরুতেই সেই কথার প্রমাণ দিলেন নাবিব নেওয়াজ জীবন। ম্যাচের ১০ মিনিটে তার দেওয়া দারুণ এক গোলে বাংলাদেশ নেপালকে লিড দেয়। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করার বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল। তপু বর্মণ, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ভালো জায়গায় থেকে হেডে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। মিডফিল্ডার মানিক হোসেন মোল্লা প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে শট করে গোল মিস করেছেন বারপোস্টের কারণে।

নেপালকে আক্রমণে ওঠার সুযোগ কমই দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে মাত্র একবার গোলে শট করতে পেরেছে নেপাল। রবিশঙ্কর পাসওয়ানের শট তখন সহজেই ঠেকিয়ে দিয়েছেন অভিষিক্ত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামা বাংলাদেশ পরিকল্পিত ফুটবল খেলতে থাকে। যদিও আক্রমণে বেশি ওঠার চেষ্টা করে নেপাল। তবে সফরকারী দলের আক্রমণে ছিলো না ধার এবং পরিকল্পনা। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে বাংলাদেশ বেশ দারুণ এক পরিকল্পিত আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ৫ জনের নেপাল ডিফেন্স ভেঙে ডি বক্সে ঢুকতে পারছিল না বাংলাদেশ। পরবর্তীতে রাইট উইং থেকে দারুণ এক শট করেন তপু। সরাসরি জালে করা সেই শট নেপাল গোলরক্ষক দারুণ দক্ষতায় নিজের আয়ত্তে নেন।

৫৯ মিনিটে প্রথমবারের মতো প্লেয়ার পরিবর্তন করে বাংলাদেশ, তাও দুটো। মানিক মোল্লার বদলে সোহেল রানা এবং জামালের বদলে মাঠে নামেন ফাহাদ। ৬৪ মিনিটে উঠে যান গোলস্কোরার জীবন, নামেন বিপলু।

হাই প্রেসিং করে খেলতে থাকা বাংলাদেশ সোহেল রানার বদৌলতে ৭৭ মিনিটে ফ্রি কিক আদায় করে নেন। জামালের বদলে নেতৃত্ব দেওয়া তপুর অসাধারণ ফ্রি কিক অল্পের জন্য বাঁচান নেপাল গোলরক্ষক কিরণ। এরপর ৭৮ মিনিটে নেপাল পায় ভালো সুযোগ। কিন্তু বাংলাদেশ গোলরক্ষক জিকোর দৃঢ়তায় রক্ষা পায় বাংলাদেশ।

এরপরই জাদুকরী গোলটি করেন মাহবুব। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে মাঝ মাঠের একটু সামনে থেকে বল পেয়ে নেপালের ডিফেন্সকে গতিতে হারিয়ে দারুণ এক গোল করেন এই ফুটবলার।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ফুটবলে দীর্ঘ ৫ বছর পর নেপালের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ। সর্বশেষ জয়টি ছিল ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায়। সেটাও ছিল ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে