চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় আগামীকাল রোববার হেফাজতে ইসলামের যে প্রতিনিধি সম্মেলন ডাকা হয়েছে সেটাকে অবৈধ আখ্যায়িত সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ দাবি করেছেন, মূলধারাকে বাদ দিয়ে চোরাইপথে কমিটি গঠন করলে তা দেশের আলেম সমাজ মেনে নেবে না।
আজ শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে একই দাবিতে সকালে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হেফাজতে ইসলামের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহি।
মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, সংগঠনের মূল ধারাকে বাদ দিয়ে চোরাই পথে কমিটি করার মানসে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম সমাজ মেনে নেবে না। যদি এর জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে হয় আমরা সেটা করতেই প্রস্তুত। যেকোনো কিছুর বিপরীতে আমরা দীনের পক্ষে কাজ করবো।
হেফাজতের আলোচিত এই নেতা বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলনের নামে আল্লামা শফী (রহ.)-এর রুম ভাঙচুর এবং তার ওপর মানসিক চাপ, অসৌজন্যমূলক আচরণ, মেডিসিন নিতে বাধা প্রদান, তার চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটানো এসবই ছিল তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এসবের মূল হোতারা এ সম্পর্কে অজ্ঞ বলে মিডিয়ার সামনে যে হাঁকডাক ছাড়ছেন তা সত্যের অপলাপ মাত্র।
আল্লামা শফীকে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, একথা জানার পরও এই চরম ও উগ্রপন্থীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, সত্যকে কখনো ধামাচাপা দেয়া যায় না। সত্য একদিন উদ্ভাসিত হবেই। সত্যের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। এ বিজয়কে মিথ্যার আশ্রয়ে চিরকাল ঢেকে রাখা যাবে না।
লিখিত বক্তব্যে ফয়জুল্লাহ বলেন, কওমি অঙ্গন ও আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর চরম বিরোধী ভান্ডারীদের মাধ্যমে এই মহলটি এখন হেফাজত দখলের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নাকি ভান্ডারীকে এসব ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দিয়েছেন এসব বলে তারা জনমনে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
হেফাজত নেতা বলেন, হেফাজতের কাউন্সিলের নামে একতরফাভাবে কাউকে দায়িত্ব দিলে তা এদেশের উলামায়ে কেরাম মেনে নেবে না। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সর্বোচ্চ আমির কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কাউন্সিলে সর্ব সমর্থিত ব্যক্তিত্বদের নেতৃত্বে আনলেই দেশবাসীসহ উলামায়ে কেরাম ওই নেতৃত্বকে গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, যাদের শ্রম ও ঘামে হেফাজতে ইসলাম এই পর্যন্ত এসেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি ও মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্ত কওমি অঙ্গনের জন্য অদূর ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শায়খুল ইসলাম (রহ.)-এর গঠিত হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। চোরাই পথে কোনো কিছু করা হলে তা মেনে নেয়া হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত নেতা মাওলানা একে এম আশরাফুল হক, মাওলানা আলতাফ হোসেন, জিয়াউল হক মজুমদার, মুজিবর রহমান, মাওলানা মনসুরুল হক প্রমুখ।