বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চতুর্থ রাউন্ড শেষেও ব্রাজিলকে থামাতে পারল না কেউ। দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দল হিসেবে শতভাগ জয়ের রেকর্ড নিয়ে ৪ ম্যাচে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে বছর শেষে সবার ওপরেই থাকল তিতের দল। বলিভিয়া, পেরু ও ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচের পর উরুগুয়ে ব্রাজিলের জন্য বড় পরীক্ষাই ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সহজেই সে পরীক্ষায় উতরে গেছে ব্রাজিল। প্রথমার্ধে আর্থার ও রিচার্লিসনের গোল করে ব্রাজিলকে জয়ের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে এডিনসন কাভানি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর আরও সহজ হয়েছে ব্রাজিলের কাজ। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হওয়ায় ২-০ গোলের জয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
ব্রাজিল ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হাসলেও শুরুতে স্বাগতিকদের দাপট ছিল বেশি। স্তেদিও সেন্তেনারিওতে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল তারা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা এডিসন কাভানির ডানপায়ের ক্ষিপ্র গতির শট বারপোস্টে লেগে ফেরে আসে।
এক মিনিটের ব্যবধানে কাভানি আরেকটি সুযোগ সৃষ্টি করেন। এবার সতীর্থর বাড়ানো বলে ঠিকঠাক মতো হেড দিতে পারলেই হয়ে যেত। কিন্তু মাথার ওপরের অংশে লেগে বল গতি হারায়। অন্যদিকে ব্রাজিল অতিথি মাঠে গুছিয়ে নিতে কিছুটা সময় নেয়। তবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আর্থুর ৩৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শটে উরুগুয়ের রক্ষণ ভাঙেন। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের থেকে পাওয়া বল সময় নিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেন আর্থুর। এরপর নেন শট। গোলরক্ষক মার্টিন কামপানা ডানদিকে ঝাপিয়েও দলকে গোল হজমের থেকে বাঁচাতে পারেননি।
তবে কয়েক সেকেন্ড পরই কামপানা দারুণ দক্ষতায় দলকে দ্বিতীয় গোল হজমের থেকে বাঁচান। মধ্যমাঠ থেকে প্রায় একাই বল নিয়ে ভেতরে ঢুকেন জেসুস। ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ডকে ঘিরে তখন দুই ডিফেন্ডার। তবুও বামপায়ে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু কামপানা এবার ছিলেন সতর্ক।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে স্বাগতিকদের জালে আরেকবার বল পাঠায় ব্রাজিল। এবারের স্কোরার রিচার্লিসন। ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে রেনান লোডির ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন রিচার্লিসন। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে আসে দ্বিতীয় গোল।
২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাজিল। ফিরে এসে উরুগুয়ে আবারও গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। ৪৮ মিনিটে কাভানির স্পটকিকে দারুণ হেড নিয়েছিলেন উরুগুয়ের অধিনায়ক দিয়েগো গোডিন। কিন্তু বারপোস্টে লেগে বল বেরিয়ে যায়।
এরপর একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ফরোয়ার্ডরা। ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল হয়নি। করোনায় আক্রান্ত হওয়া লুইস সুয়ারেজের অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছে উরুগুয়ে। এদিকে ম্যাচের ৭১ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় কাভানিকে।
টানা চার ম্যাচে চার জয় তুলে কাতার বিশ্বকাপর টিকিট অনেকটাই নিশ্চিত করে নিয়েছে ২০১৪ বিশ্বকাপের আয়োজকরা। এবার শুধু পারফরম্যান্স ধরে রাখার পালা। তিতের শিষ্যরা নেইমারকে ছাড়া যেভাবে দাপুটে ফুটবল খেলছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
আপাতত জাতীয় দলের খেলা নেই সেলেসাওদের। আগামী বছরের ২৫ মার্চ ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। উরুগুয়ে খেলবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।