ব্যাংককে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পার্লামেন্ট ছাড়লেন এমপিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ব্যাংকক

সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর দাবিতে কয়েক মাস ধরে সহিংস বিক্ষোভ চলে আসছে থাইল্যান্ডে। কয়েকদিন বিক্ষোভ বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী ব্যাংকক আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পার্লামেন্টের বাইরে গণতন্ত্রপন্থী ছাত্রদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয় রাজতন্ত্রপন্থী সমর্থকদের। দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে, পরে বিশেষ রাসায়নিক মেশানো কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। অনেকের শরীরে বুলেটের আঘাত মিলেছে। গত চার মাসের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সংঘাতের ঘটনা।

এ সময় নদীর পাশে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবন থেকে এমপিরা নৌকায় স্থান ত্যাগ করেন। এমপি, সিনেটর এবং পার্লামেন্টের কর্মকর্তারা মেরিন ডিপার্টমেন্টের নৌকায় করে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে ছাও ফারায়া নদী পার হন। খবর ব্যাংকক পোস্টের।

গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাংককে আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্ররা। বর্তমান সরকার এবং তার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। শুধু তাই নয়, ছাত্রদের দাবি সেনার তৈরি সংবিধান বদলে গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে। রাজার ক্ষমতাও কমাতে হবে। এর আগে পার্লামেন্টের সামনে দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন তারা। আন্দোলনের চাপে কারফিউ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল প্রশাসন। তারপরও ছাত্রদের দমিয়ে রাখা যায়নি। তবে মঙ্গলবার যে ঘটনা ঘটেছে, গত চার মাসের মধ্যে এত বড় সংঘাত থাইল্যান্ডে ঘটেনি।

মঙ্গলবার ব্যাংককের রাজপথে মিছিল করে বেরিয়েছিলেন গণতন্ত্রপন্থী ছাত্ররা। তাদের লক্ষ্য ছিল সংসদ ভবন। শান্তিপূর্ণ মিছিল চলার সময়েই রাজতন্ত্রপন্থীরা তাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গণতন্ত্রপন্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।

পাল্টা আঘাত করেন গণতন্ত্রপন্থীরাও। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজপথ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দুই পক্ষকে আলাদা করার চেষ্টা করে। শুরু হয় লাঠিচার্জ। সঙ্গে বিশেষ রাসায়নিক মেশানো কাঁদানে গ্যাস। কাঁদানে গ্যাসে বহু আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় প্রায় ৪০ জনকে। তার মধ্যে অনেকের শরীরে বুলেটের ক্ষত মিলেছে। পুলিশ অবশ্য গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তা হলে কি রাবার বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ? নাকি রাজতন্ত্রপন্থীরা গুলি চালিয়েছিল? প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনো পর্যন্ত দিতে পারেনি পুলিশ।

যত দিন যাচ্ছে, থাইল্যান্ডের সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ তত তীব্র হচ্ছে। বহু সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রপন্থীদের সমর্থন করছেন। সরকার সংবিধানের কিছু অংশ পরিবর্তনের আশ্বাস দিলেও গণতন্ত্রপন্থীদের বক্তব্য তা যথেষ্ট নয়। যেভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা দখল করে আছেন, তারও তীব্র বিরোধী তারা। ফলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে তারা জানিয়ে দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে