করোনায় আক্রান্ত প্রতি ৯ জনের মধ্যে একজন শিশু : ইউনিসেফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনায় আক্রান্ত শিশু
ছবি : ইন্টারনেট

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ৯ জনের মধ্যে একজন শিশু ও কিশোর-কিশোরী রয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের মাঝে হালকা উপসর্গ দেখা গেলেও সংক্রমণের হার বাড়ছে এবং দীর্ঘমেয়াদে শিশু ও তরুণদের পুরো একটি প্রজন্মের শিক্ষা, পুষ্টি ও সামগ্রিক কল্যাণের ওপর এর প্রভাব জীবন বদলে দিতে পারে।

বিশ্ব শিশু দিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘অ্যাভারটিং এ লস্ট কোভিড জেনারেশন’ শীর্ষক ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারি অনিয়ন্ত্রিতভাবে দ্বিতীয় বছরের দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং এ প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে ইউনিসেফ শিশুদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্রমবর্ধমান পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির এ পুরো সময় জুড়ে অব্যাহতভাবে একটি ধারণা চলে আসছে যে, এতে শিশুদের তেমন ক্ষতি হয় না। এটা মোটেও সত্য নয়। শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে এ রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে। আর এটা মহামারিজনিত সমস্যার একটি ছোট অংশ। গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রাপ্তিতে বিঘ্ন এবং দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি শিশুদের ক্ষেত্রে এর চেয়েও বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। এ সংকট যত দীর্ঘ হবে, শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সামগ্রিক কল্যাণের ওপর এর প্রভাব তত গভীর হবে। পুরো একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৭টি দেশের বয়সভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত প্রতি ৯ জনের মধ্যে ১ জন ২০ বছরের কম বয়সী শিশু ও কিশোর-কিশোরী, যা এই দেশগুলোতে মোট আক্রান্ত ২ কোটি ৫৭ লাখ মানুষের ১১ শতাংশ এই সংকট কীভাবে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের জীবনকে প্রভাবিত করে এবং এটি মোকাবিলার উপায় কী তা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংক্রমণ, মৃত্যু ও শনাক্তকরণ পরীক্ষার আরও নির্ভরযোগ্য বয়সভিত্তিক তথ্য প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যেহেতু শিশুরা একে অন্যের মাঝে ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে এবং বেশি বয়সী মানুষের মাঝেও এক্ষেত্রে জোরালো প্রমাণ রয়েছে যে, প্রাথমিক সুরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর থাকলে স্কুল বন্ধ রাখলে যে ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বরং বেশি সুবিধা পাওয়া যায় স্কুল খোলা রাখলে। কমিউনিটিতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে স্কুলগুলোই একমাত্র চালিকা শক্তি নয় এবং শিশুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুলের বাইরে থেকেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেন, মহামারির ব্যাপকতায় বিশ্বের ১৯২টি দেশ স্কুল বন্ধ করে দেয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ দেশ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে স্কুলগুলো পুনরায় চালু করে। একটি নির্ধারিত তারিখ লক্ষ্য করে নিরাপদে স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য পরিচালনাগত পরিকল্পনার প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা প্রাপ্তিতে কোভিডজনিত বাধা শিশুদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে