মানুষ ও প্রাণির জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স জনস্বাস্থ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বলে সতর্ক করেছেন, কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের ঘাটতি একসময় করোনার চেয়েও বড় বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। এ ব্যাপারে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার রাতে ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’ নামের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মের যাত্রার অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারের বক্তব্যে এ সতর্কতা করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর অ্যানিম্যাল হেলথের (ওআইই) উদ্যোগে এই গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এর লক্ষ্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগ নিশ্চিত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ ও প্রাণি উভয়ের জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স একটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অপরিণামদর্শী খাদ্য উৎপাদন আমাদের বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা কমে আসছে এবং এর ফলে বিশ্ব নতুন সংকটে পড়তে পারে, যা বর্তমানের কোভিড-১৯ মহামারির চেয়ে ভয়ংকর হতে পারে। যুগের পর যুগ বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে আমাদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবায় যে সাফল্য এসেছে, তা ম্লান করে দিতে পারে এটা।
অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, ভুল ডোজ এবং সার্বিকভাবে দুর্বল সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সরকারের এ-সংক্রান্ত পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গৃহীত গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বাংলাদেশে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল মেয়াদি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট বিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। সারা দেশে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এটি সরকারের কার্যকর একটি পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংক্রমণের ধরনের ওপর নজর রাখার পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিকের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার নিশ্চিত এবং এর যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার উপায় বের করতে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দেন।
নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের জন্য গবেষণায় সম্মিলিত আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন অ্যান্টিবায়োটিক যেন সবার সামর্থ্যের মধ্যে থাকে তাও নিশ্চিত করতে হবে।