বনানীর ফারুক-রূপায়ন (এফ আর) টাওয়ার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে ভূমি মালিক, ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক ও রাজউকের ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার মামলার অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য নিশ্চিত করেন।
বাকি আসামিরা হলেন- রূপায়ন হাউজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল (এল এ মুকুল), কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসভীর-উল-ইসলাম
এই তিনজন ছাড়াও মামলায় রাজউকের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন- সহকারী অথরাইজড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, মো. শামসুল আলম, পরিচালক (এস্টেট), সাবেক উপ-পরিচালক (এস্টেট) মুহম্মদ শওকত আলী, সাবেক সহকারী পরিচালক (এস্টেট) শাহ মো. সদরুল আলম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক (এস্টেট) জাহানারা বেগম, সাবেক পরিদর্শক মো. মেহেদউজ্জামান, নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক, সাবেক পরিচালক (এস্টেট) মো. আবদুল্লাহ-আল-বাকী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মো. মোফাজ্জেল হোসেন, উচ্চমান সহকারী, মো. সাইফুল আলম, ইমারত পরিদর্শক (নকশা জমা গ্রহণকারী) ইমরুল কবির ও মো. শওকত আলী, উচ্চমান সহকারী (ইস্যুকারী) (সাময়িক বরখাস্ত) মো. শফিউল্লাহ, সাবেক অথরাইজড অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।
গত ২০১৯ সালের ২৫ জুন এই বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ১৯৯৬ এর বিধি-বিধান লঙ্ঘন করেন।এছাড়া ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র ইস্যু, ফি জমা ও নকশা অনুমোদন ছাড়া ভুয়া নকশা তৈরি, ১১ তলার ডেভিয়েশনসহ নির্মাণ, ১৯ হতে ২৩ তলা পর্যন্ত অবৈধভাবে নির্মাণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক প্রদান ও বিক্রি করার অপরাধ করেন। যে কারণে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১৬৬/ ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরাধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, এফ আর টাওয়ারের ১৫ তলা থেকে ২৩ তলা অনিয়মের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। শুরুতে ১৫ তলা ভবনের নকশা অনুমোদনেও নীতিমালা মানা হয়নি। তদন্তে নেমে ভবনটির দুটি নকশা হাতে পায় দুদক। একটি নকশায় ১৮ তলা ও অন্যটিতে ২৩ তলা দেখানো হয়েছে।
সে সময়ে মামলার এজহারে ২০ জনকে আসামি করা হলেও পরে তদন্তসাপেক্ষ আরও পাঁচজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে নতুন করে এজহারভুক্তির তালিকা থেকে সাতজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
অব্যাহতি পাওয়া আসামিরা হলেন- সাবেক অথরাইজড অফিসার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মৃত্যুবরণ করায়) সৈয়দ নাজমুল হুদা, প্রকৌশলী কে এ এম হারুন, সাবেক চেয়ারম্যান আ, ই, ম গোলাম কিবরিয়া, প্রাক্তন সদস্য (এস্টেট) মো. রেজাউল করিম তরফদার, সাবেক অথরাইজড অফিসার মো. সামছুর রহমান, সাবেক ইমারত পরিদর্শক মাহবুব হোসেন সরকার ও সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফ আর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ২৬ জন মারা যান। এরপর ওই টাওয়ার নির্মাণে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।