স্বাস্থ্যখাতে ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন (ডিপিএল) হিসেবে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা)। এই ঋণ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের কাজে ব্যয় করবে সরকার।
জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর জাপান অ্যাম্বাসির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার করোনা-ভ্যাকসিনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাইকা ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোনকে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ভ্যাকসিনের কাজে ব্যয় করা যায় কি না সেটির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেছে। একই সাথে বাংলাদেশ সরকারকে কিভাবে এই ঋণের অর্থ ব্যয় করা হবে সে বিষয়ে কর্ম-পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত ১৩ নভেম্বর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূরকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে জাইকা।
চিঠিতে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয় আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
জাইকার চিঠির ভিত্তিতে ঋণের বিষয়ে মতামত দিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ও স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অনুরোধ জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।
মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব খাদিজা পারভীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতে ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন গ্রহণের বিষয়ে জাইকা থেকে কিছু ডকুমেন্ট পাঠানো হয়েছে।
ডকুমেন্টের মধ্যে অ্যানেক্সার-২ এ চাহিত তথ্যাদিসহ অন্যান্য সকল বিষয়ে প্রাসঙ্গিক মতামত আগামী ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এ বিভাগে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে মতামত পাঠানোর জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সময় শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর)। কী মতামত দেয়া হয়েছে, সেটি জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি দেখছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন।’
তবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও উত্তর দেননি।
জাইকার ঋণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব (জাপান উইং) আশরাফ আলী ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাইকা বলেছে ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোনের একটি কম্পোনেন্ট হতে পারে। কিন্তু ভ্যাকসিনের সঙ্গে এটি সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, তবে তারা বলছে এটার একটি কম্পোনেন্ট হতে পারে এটি। কিন্তু এটি চূড়ান্ত নয়।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সিরামের কাছ থেকে বাংলাদেশ প্রথম পর্যায়ে পাবে ৩ কোটি ডোজ টিকা। জানুয়ারি থেকে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে এই ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা করছে মন্ত্রণালয়। প্রতি জনকে দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন দিতে হবে, তাতে প্রথম দফায় দেড় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে।
আর ডোজপ্রতি ভ্যাকসিনের কোল্ডচেইন নিশ্চিত করতে খরচ হবে ১.২৫ ডলার। ইতোমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে সম্মতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্ব্যব্যাংকের ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তায় চলমান ‘কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ শীর্ষক প্রকল্পে বাড়তি অর্থায়ন বাবদ এ সহায়তা আসবে।