এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবি ব্যাংক

অস্তিত্বহীন তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে ২৩৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ অন্তত দুই ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরের তিনটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল এই টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

universel cardiac hospital

আজ মঙ্গলবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সচিব দেলোয়ার বখত।

যে তিন প্রতিষ্ঠানের ঋণ দেখিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়, সেগুলো হলো- ইউএইর সেমাট সিটি জেনারেল ট্রেডিং, সিঙ্গাপুরের এটিজেড কমিউনিকেশনস পিটিই লিমিটেড ও ইউরোকারস হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড।

যে ২৩ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার করা হয়েছে তারা হলেন-

এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক এমডি শামীম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ডিএমডি মশিউর রহমান চৌধুরী ও ডিএমডি সাজ্জাদ হোসেন, অপারেশন ম্যানেজার খাতুনগঞ্জ শাখা মো. লোকমান হোসেন, চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখার সাবেক এসএভিপি মো. শাহজাহান, সাবেক পিও মো. আরিফ নেওয়াজ, সাবেক এভিপি মো. সালাহ উদ্দিন।

এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ইভিপি মো. শাহজাহান, ইভিপি মো. আমিনুর রহমান, সাবেক ইভিপি সরফুদ্দিন আহমেদ, বিজনেস ডিভিশনের এভিপি কাজী আশিকুর রহমান, সাবেক ইভিপি কাজী নাসিম আহমেদ, সাবেক এসইভিপি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাবেক এসইভিপি ও সদস্য ক্রেডিট কমিটি সালমা আক্তারের নামও এসেছে।

তালিকায় আরও আছেন সাবেক পরিচালক এমএ আউয়াল, ফাহিম উল হক, ফিরোজ আহমেদ, সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন, শিশির রঞ্জন বোস, বিবি সাহা রায়, মো. মেজবাউল হক ও ড. মো. ইমতিয়াজ হোসেন।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কিছু অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড় করা হয়। এছাড়া নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকিং হিসাব খোলার আগেই ঋণ অনুমোদনের প্রমাণ উঠে আসে প্রাথমিক অনুসন্ধানে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এসব কাগুজে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করতেই। সে কারণেই তড়িঘড়ি করে এসব অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠাণের নামে ঋণ ছাড় করা হয়। ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন ২৩ কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে এ কাজে সহযোগিতা করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পায়। এজন্য দুদকের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা তিনটি করা হয়।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, তিন ধাপে এ টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ১৬০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, দ্বিতীয় ধাপে ৬০ কোটি ও তৃতীয় ধাপে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা পাচার করা হয়। এরমধ্যে প্রথম দুই দফা পাচারের ঘটনায় দুই মামলায় ২৩ জন ও তৃতীয় পর্যায়ে ২১ জনকে আসামি করে মামলার জন্য সুপারিশ করা হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে