জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে অনাহুত বিতর্ক সৃষ্টি করছে এবং এর পেছনে ‘ভিন্ন উদ্দেশ্য’ থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একটি গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
শনিবার সকালে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামের জন্য বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেশে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা, চর্চা এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে মাদ্রাসা বোর্ড পুনর্গঠনসহ ইসলাম প্রচারে তাবলিগ জামাতকে জমি প্রদান করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পবিত্র ধর্মের একজন নিবেদিত প্রাণ ও অনুসারী হিসেবে ইসলামের সঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয় করে প্রকৃত ইসলামের চর্চা এগিয়ে নিতে জনমানুষের ধর্মানুরাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশের প্রতিটি উপজেলায় নির্মাণ করেছেন মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স। একজন ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্বে তখন এদেশে ইসলামবিরোধী কোনো কার্যক্রম হবে, তা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’
ভাস্কর্যকে মূর্তি হিসেবে অভিহিত করে হেফাজতে ইসলামসহ যারা এর বিরোধিতা করছেন তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলে অপপ্রচারে নেমেছে, তারা নিজেরাই ভ্রান্তিতে আছে, দেশের আলেমসমাজ এবং বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই বারবার বলেছেন মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়।’ ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের সংস্কৃতির প্রতি চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম আমাদের ধর্ম, এই ধর্মের বিধি-বিধানে ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক করতে, নিষেধ করা হয়েছে ফিতনা–ফ্যাসাদ সৃষ্টিতে।’
হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্থপতির ভাস্কর্য টেনেহিঁচড়ে নামাবে বলে কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন, তাদের এমন রুচি এবং ভাষা ব্যবহার দেখে তাদের ধর্মচর্চা ও ইসলামি রুচিবোধ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
প্রকৃত ইসলাম চর্চার আহ্বান জানিয়ে সরকারের এই মুখপাত্র বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে সবাই বিরত থাকি। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করি।’
ভাস্কর্যবিরোধীদের সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না, জনগণের শান্তি বিনষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা করলে জনগণই রুখে দাঁড়াবে।’