সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (নারকোটিক্স) আওতায় দেশের ১৯টি জেলায় ডোপ টেস্ট ল্যাব (মাদকাসক্তি শনাক্তকরণ পরীক্ষাগার) স্থাপন করতে যাচ্ছে। ঢাকায় ৩টিসহ প্রাথমিকভাবে মোট ২১টি স্থানে ল্যাব স্থাপিত হবে। পর্যায়ক্রমের ল্যাবের সংখ্যা আরও বাড়বে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেও ডোপ টেস্ট করাতে হবে। পুলিশ বাহিনীতে ইতোমধ্যে এ টেস্ট শুরু হয়েছে। মাদকাসক্তি শনাক্ত হওয়ায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার বলেন, সরকারি চাকরি প্রার্থী, শিক্ষার্থী এবং গাড়ি চালক যদি জানেন যে ডোপ টেস্টের মধ্যে পড়তে হবে তাহলে তারা মাদক সেবনে নিরুৎসাহিত হবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ২১টি ল্যাব স্থাপন করা হলেও পরবর্তীকালে প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে।
দেশে অব্যহতভাবে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ইয়াবা, ফেনসিডিল এবং হেরোইনে আসক্ত হচ্ছে তরুণরা। সরকারি নানা উদ্যোগের পরও মাদক পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হচ্ছে না। সর্বনাশা ইয়াবার পাচার কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রোগীদের ৬০ শতাংশের বেশি ইয়াবা আসক্ত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ইউরিন এবং লালার পাশাপাশি চুল, রক্ত এবং নখের নমুনা থেকে মাদকাসক্তি নির্ণয় করা হবে। কারণ লালা এবং ইউরিন থেকে ৫-৭ দিন পর মাদকাসক্তির উপস্থিতি হারিয়ে যায়। কিন্তু চুল এবং নখের নমুনা থেকে ৩ মাস পরও মাদকাসিক্ত শনাক্ত করা সম্ভব।
অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাঞ্জুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়াটি চূড়ান্তভাবে শুরুর আগে ডোপ টেস্ট বিধিমালা চূড়ান্ত হতে হবে। এ সংক্রান্ত বিধিমালা এখন আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সাল পর্যন্ত ধরা হয়েছে। তবে সরকার চাইলে মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (উত্তর) মেহেদী হাসান বলেন, প্রায় ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ডোপ টেস্ট ল্যাব প্রকল্পটি পিইসি সভায় পাস হয়ে একনেকে যাচ্ছে। তবে পরবর্তী সময়ে বাজেটের আকার আরও কিছুটা বাড়তে পারে।