সম্প্রতি পেনসিলভেনিয়ায় ভোট বাতিলের জন্য করা মামলায় হেরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এরপরই তিনি দাবি করেছেন, জাল ভোট বাতিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছিল। এর পক্ষে বিশাল প্রমাণ রয়েছে।
পেনসিলভেনিয়ায় ৮১ হাজার ভোট বাতিলের আবেদন করেছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা। তবে আবেদনের পক্ষে শক্ত কোনো প্রমাণ নেই বলে জানায় আদালত। এরপরই ট্রাম্প টুইটবার্তায় বলেন, পেনসিলভেনিয়া মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছিল এবং আমাদের কাছে বিশাল প্রমাণ রয়েছে। কিছু লোক এটি দেখতে চান না। তারা আমাদের দেশকে বাঁচানোর জন্য কিছু করতে চান না। দুঃখ।
অপর একটি টুইটে ট্রাম্প বলেন, পেনসিলভেনিয়া ক্ষেত্রে আমাদের প্রচার প্রচারণা যে চ্যালেঞ্জ করছে তা ৮১ হাজার ভোটের ব্যবধানের চেয়ে অনেক বেশি বড়। এই মামলার একটি বড় অংশ প্রতারণা ও অবৈধতা। নথি সম্পূর্ণ হচ্ছে, আমরা আবেদন করব!
এছাড়াও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনা নিয়ে এখন ভিন্ন কথা বলছেন ট্রাম্প। তিনি এখন বলছেন, পুনর্গণনা করা হয়েছে গণনার ভুল ধরার জন্য নয়; বেআইনিভাবে ভোট দেওয়ার ঘটনা খুঁজে দেখার জন্য।
৩০ লাখ ডলার ব্যয় করে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনা জন্য আবেদন করেছিল ট্রাম্প শিবির। উইসকনসিনের মিলাউকি কাউন্টিতে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার ভোট পুনর্গণনা হয়। এতে বাইডেনের ভোট আরও বেড়েছে। পুনর্গণনায় বাইডেনের আগের ভোটের সঙ্গে ২৫৭ ভোট ও ট্রাম্পের ১২৫ ভোট যোগ হয়েছে। ফলে, নতুন যোগ হওয়া ভোটে বাইডেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের চেয়ে আরও ১৩২ ভোট বেশি পেয়েছেন। উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট-প্রধান এলাকা ডেইন কাউন্টির ভোট এখনো গণনা চলছে।
উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ভোট প্রত্যয়নের শেষ দিন আগামী মঙ্গলবার। অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান মিলে গঠন করা নির্বাচন বোর্ডের এই প্রত্যয়ন করার কথা। ইতিমধ্যে উইসকনসিন ভোটার অ্যালায়েন্স নামের ট্রাম্প–সমর্থক একটি রক্ষণশীল গ্রুপ ভোট প্রত্যয়ন বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে আদালতে।
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এখন সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিচারপতি স্যামুয়েল এলতোর আদালতে তাঁরা কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যয়নের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে শুনানির আবেদন জানাবেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশা করছেন, সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির মধ্যে তার ঘরানার সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন রয়েছে। যাদের মাধ্যমে তিনি সফল হতে পারেন।
রাজনৈতিক মতাদর্শ এক হলেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা পেনসিলভেনিয়া বা অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের ফল পাল্টে দিতে আদেশ দিবেন এমনটি অসম্ভব বলে জানিয়েছেন আইন বিশ্লেষকরা।
৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর থেকে জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। একাধিক মামলাও করেছেন তার আইনজীবীরা। তবে কোথাও তারা এই অভিযোগের পক্ষে শক্ত প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে অনেক এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। শুরুতে ক্ষমতা না ছাড়ার জোরালো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। নির্বাচনের ২০ দিন পর এসে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন দেন এবং গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনে হারলে হোয়াইট হাউস ছাড়তেও রাজি আছেন বলে জানান ট্রাম্প।
যদিও এখনো নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ থেকে সরে আসেননি এবং আদালতে এ নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় অটল রয়েছেন ট্রাম্প।