ইরানের পার্লামেন্ট শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য ২০ শতাংশ মাত্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ইউরেনিয়ামের উৎপাদন ও মজুত রাখতে পারার বিষয়ে আইন পাস করেছে।
এর ফলে ইরানের জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থা চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে।
ইরানের আইনপ্রণেতারা দেশবিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি বিল পর্যালোচনার পর তা অনুমোদন করেছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থাকে প্রতিবছর চাহিদা মেটানোর পর ২০ মাত্রার ১২০ কেজি ইউরেনিয়াম দেশে মজুত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে কোনো ধরণের বিলম্ব গ্রহণযোগ্য হবে না।
পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলো যদি তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি মেনে না চলে এবং ইরানের তেল ও তেলজাত পণ্য রপ্তানি ও বিদেশ থেকে অর্থ দেশে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সৃষ্ট বাধা দূর না করে তাহলে এই আইন পাসের একমাসের মধ্যে পরমাণু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সব প্রটোকল বাস্তবায়ন থেকে সরে আসতে হবে।
সম্প্রতি ইরান ইউরেনিয়ামের মজুদ ১২ গুণের বেশি বৃদ্ধি করেছে বলে গ্লোবাল ওয়াচডগ নিশ্চিত করেছে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বলছে, এখন ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুদের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৪৪৩ কেজি।
মূলত পারমানবিক বোমা তৈরিতে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়। তবে ইরান সবসময়ই দাবি করে আসছে যে, তারা শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ইউরেনিয়ামের মজুদ ১০ গুণ বৃদ্ধি করেছিল ইরান। সে সময় ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুদের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১০৫ কেজি।
চুক্তি অনুযায়ী পরমাণু অস্ত্র বানাতে প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের চেয়ে অনেক কম মাত্রায় ইউরেনিয়াম ইরানের উৎপাদন করার কথা। আইএইএ জানিয়েছে, ইরান ক্রমাগত তাদের পরমাণু সমৃদ্ধি বাড়িয়ে যাচ্ছে।
২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী, ৩.৬৭ শতাংশ পরমাণুর মজুদ থাকার কথা থাকলেও এর চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে। চুক্তির বাইরে পরমাণুর মজুদ বাড়িয়ে চলেছে দেশটি।