রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাচ্ছে, স্বদেশে যাবে কবে? ।। বিভুরঞ্জন সরকার

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়া এবং কুতুপালং ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিপুল অর্থ ব্যয়ে ভাসানচরে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আবাসন ব্যবস্থা। এক লাখ মানুষের বসবাসের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এ নতুন আবাসস্থলে।

কিন্তু শরণার্থীদের অনাগ্রহ, কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওর বিরোধিতার কারণে একটু দেরি হলেও কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের একটি দল ৪ ডিসেম্বর ভাসানচরে পৌঁছেছে। প্রথম দফায় মাত্র ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরুষ ভাসানচরে গিয়েছে। বাকিরা কবে যাবে, তা এখনও জানা যায়নি। কক্সবাজারে অতিরিক্ত চাপ কমানোর জন্যই যে এ স্থানান্তর তা সহজেই অনুমেয়। তবে যে সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, এক লাখ তার সামান্য অংশমাত্র।

universel cardiac hospital

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতায় টিকতে না পেরে লাখ লাখ শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নিজ দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে তাদের সঙ্গে যে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে, তা মানবতার চরম অবমাননা। বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে, নির্বিচারে হত্যা করে রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট এক ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আর ভিন্ন দেশের এ সমস্যা বাংলাদেশকে ফেলেছে ঝুঁকির মধ্যে।

প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ মানবিক কারণে বাংলাদেশ আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই রাজনীতির চেয়ে মানবিকতাকে উপরে ঠাঁই দিয়ে থাকেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। বঙ্গবন্ধু যেমন বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন, তেমনি তার কন্যা শেখ হাসিনার হৃদয়ও করুণাধারায় ভরা।

বাংলাদেশের পক্ষে দীর্ঘদিন এত বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর চাপ বহন করা কঠিন, তারপরও তিনি তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। নিরস্ত্র, নিরুপায় মানুষকে মৃত্যুপথে ঠেলে দেয়ার মতো বর্বরতা আর কিছু হতে পারে না। কিন্তু মিয়ানমারের নেত্রী, নোবেলজয়ী অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখন রীতিমতো হৃদয়হীন আচরণ করছেন। ভয়ংকর সু চি বলে তাকে উল্লেখ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা মুসলমান বলেই কি তাদের ওপর এ অমানবিক আচরণ? আমাদের দেশের গণমাধ্যমের প্রচার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে শুরুতে তাই মনে হয়েছে। এটা ঠিক যে, ধর্ম বিশ্বাসের দিক থেকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। তবে সামান্য কিছু বৌদ্ধ এবং হিন্দুও আছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু হিন্দু পরিবারও আছে। মিয়ানমারের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। এর মধ্যে ৮৭.৯ শতাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এরপর খ্রিস্টান আছে ৬.২ শতাংশ। মোট জনসংখ্যার ৪.৩ শতাংশ মুসলমান। সনাতন ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা খুবই সামান্য, মাত্র ০.৫ শতাংশ। উপজাতীয় আছে ০.৮ শতাংশ।

এ হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে মুসলমান জনসংখ্যা চব্বিশ লাখের কাছাকাছি। কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমানের সংখ্যা দশ-বারো লাখের বেশি নয় বলেই জানা যায়। তার মানে রোহিঙ্গা ছাড়া অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যেও মুসলমান আছে।

রাখাইন ব্যতীত অন্য রাজ্যে সেসব মুসলমান বসবাস করেন। যদি শুধু মুসলিমবিদ্বেষের কারণে মিয়ানমারে গণহত্যার মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হতো, তাহলে সেটা কেবল রাখাইনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত কি? রাখাইনের বাইরে আর কোথাও মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হওয়ার খবর কিন্তু পাওয়া যায়নি।

তাহলে কি এটা মনে হয় না, ধর্ম বিশ্বাস ছাড়া আরও কিছু ব্যাপার আছে যেজন্য রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এতটা মারমুখী? ইতিহাস এটাই বলে, রোহিঙ্গা সমস্যাটা পুরনো এবং জটিল। ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই সেখানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। রোহিঙ্গাদের কখনই বার্মা বা মিয়ানমার তার অধিবাসী বলে স্বীকার করে না। রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ বলে মনে করা হয় এবং এটাও বলা হয়, এরা চট্টগ্রাম থেকে গিয়ে আরাকানে বসতি গেড়েছে।

সে কারণে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হয় না। তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, কাজের সুযোগ নেই। ফলে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে অধিকাংশ রোহিঙ্গাকে জীবন কাটাতে হয়। তারা যে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থায় বসবাস করে তাতে অপরাধমূলক কাজে তাদের জড়িয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আর রোহিঙ্গাদের অপরাধপ্রবণতা বার্মিজ কর্তৃপক্ষকে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে কিনা- সে প্রশ্নও আছে।

রোহিঙ্গারা দীর্ঘ সময় ধরে বৈষম্য-বঞ্চনা-শোষণের শিকার। শত শত বছর থেকে বসবাস করেও তারা কেন মিয়ানমারের নাগরিক নয়- এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না। অন্য সম্প্রদায়ের মুসলমানদের ব্যাপারে আপত্তি না থাকলেও রোহিঙ্গাদের নিয়ে আপত্তির কারণ অনুসন্ধান কি কেউ করার চেষ্টা করেছেন? রোহিঙ্গারা যুগ যুগ ধরে বাস করেও কেন বার্মিজদের কাছে আপন হতে পারলেন না, তা কি একটি বড় গবেষণার বিষয় হতে পারে না?

রোহিঙ্গা সমস্যাকে যারা ধর্মীয় সমস্যা হিসেবে দেখতে চান, তারা ঠিক কাজ করছেন বলে মনে হয় না। শিক্ষার অভাবেই হয়তো রোহিঙ্গাদের মধ্যে নাগরিক সচেতনতার ঘাটতি আছে। সেজন্য নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে তাদের কোনো সংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা শোনা যায় না।

দীর্ঘ সামরিক শাসনের কবলে থাকার পরও বার্মায় অং সান সু চির নেতৃত্বে জোরদার গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া নিয়ে কোনো আন্দোলন করেছেন, তেমন তথ্য কারও কাছে আছে কি?

২০১৭ সালের আগেও একাধিকবার রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তাদের ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপ সহ্য করছে। ২০১৭ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর মরণ কামড় হেনেছে।

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসা নামের একটি বিদ্রোহীগোষ্ঠী ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রাণের মায়ায় দেশত্যাগী হতে থাকে রোহিঙ্গা নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মানুষ। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংস করতে সেনাবাহিনীর মধ্যে এক ধরনের উন্মত্ততা দেখা যাচ্ছে। মনে হয়, তারা পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করছে।

২.

রোহিঙ্গা সমস্যা নিতান্তই মিয়ানমারের সমস্যা। সে দেশের সরকার তার একটি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জিঘাংসা চরিতার্থ করছে। কিন্তু এ সমস্যায় এখন বাংলাদেশও বাধ্য হয়েই একটি পক্ষ হয়ে গেছে। কারণ কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, তারা যেন তাদের নাগরিকদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দিয়ে নিজ দেশে অবিলম্বে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকারকে এ ক্ষেত্রে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। আশা করা যায়, বাংলাদেশ মানবিকতার পাশাপাশি কূটনৈতিক লড়াইয়েও এগিয়ে থাকবে।

আমাদের দেশের চিরাচরিত দোষারোপের রাজনীতির প্রতিফলন আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুতেও দেখতে পাচ্ছি। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী একটি মহল সরকারের ব্যর্থতা আবিষ্কারে উঠেপড়ে লেগেছে, এটা ভালো নয়। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান যথাযথ। যারা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখছেন, তারা ভুলে যান যে, দেশের বাইরে আমাদের যেমন বন্ধু রাষ্ট্র আছে, তেমনি মিয়ানমারও নিশ্চয়ই একেবারে বন্ধুহীন নয়। তাছাড়া ঘটনা ঘটেছে আকস্মিকভাবে। আগে থেকে এর কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ ছিল না। পরিস্থিতি দেখে-বুঝেই কৌশল ও কার্য পদ্ধতি ঠিক করতে হয়েছে।

যারা রোহিঙ্গা সমস্যার সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে মিলিয়ে-গুলিয়ে ফেলছেন, তারাও ভুলে যাচ্ছেন, একাত্তরের পঁচিশে মার্চের পরপরই আন্তর্জাতিক জনমত বা বিশ্ব বিবেক আমাদের পক্ষে দাঁড়ায়নি। এজন্য কিছু সময় লেগেছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বিশ্বব্যাপী ছুটে বেড়াতে হয়েছিল। তখন পৃথিবী ছিল দুই ভাগে বিভক্ত।

এক ভাগ বিরুদ্ধে গেলে আরেক ভাগকে পক্ষে পাওয়ার একটি প্রবল সম্ভাবনা উজ্জ্বল ছিল। এখন এক পৃথিবী কিন্তু স্বার্থ-দ্বন্দ্বে বহুধাবিভক্ত। ভারত এবং চীন যেমন বাংলাদেশের বন্ধু, তেমনি মিয়ানমারেরও বন্ধু। কাজেই পক্ষ নির্ধারণ এখন হয়ে থাকে নানা বাণিজ্যিক ও ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা মাথায় রেখে। সরকারের গায়ে হুট করে ব্যর্থতার তকমা এঁটে দেয়া যত সহজ, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে আনা তত সহজ নয়। এটি ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে রাখা পাকা কলা নয়, ছিললাম আর খেয়ে নিলাম! অহেতুক ধৈর্যহারা না হয়ে আমাদের এগোতে হবে সবদিক বিবেচনায় রেখেই।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে আমাদের নাগরিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যেও এক ধরনের ভ্রান্তি এবং সাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রকাশ লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকেই বিষয়টিকে মুসলিম নিধন হিসেবে দেখছেন এবং এ ব্যাপারে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য প্রত্যাশা করছেন। বিষয়টিকে যদি আমরা এ ধর্মবৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলি তাহলে সমাধান পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আমার বিশ্বাস।

হামলা মুসলমানের ওপর হয়নি, হয়েছে মানুষের ওপর। দুর্ভাগ্যক্রমে এ মানুষের বেশির ভাগ ধর্ম বিশ্বাসের দিক থেকে মুসলমান। মানুষের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে যখন মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তখন পৃথিবীব্যাপী মানুষের শুভ বুদ্ধিকেই জাগ্রত করতে হবে। স্বধর্ম, স্বদেশ, স্বজাতির প্রতি দরদ-দুর্বলতা-সহমর্মিতা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি যদি অন্য ধর্ম, অন্য দেশ ও অন্য জাতির প্রতি বিদ্বেষের জন্ম দেয়, তাহলে সেটা হয় বিপজ্জনক। তাছাড়া মুসলিম বিশ্বের ঐক্য কি আমরা কখনও কোনো ইস্যুতে দেখেছি? মুসলিম বিশ্ব কি বিভেদ-বিরোধিতায় জড়িয়ে নেই?

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা হচ্ছে বলে আমাদের অনেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কারণ মিয়ানমারে বেশিরভাগ মানুষ বৌদ্ধ। এ ধরনের মনোভাব কি সুস্থ মানসিকতার প্রতিফলন? এটা বরং ক্ষতিকর। কোনো মুসলমানপ্রধান দেশে যখন মুসলমানদের হত্যা করা হয়, তখন কি মুসলমানদের প্রতি আমরা আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখাই?

পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকসহ মুসলিমপ্রধান দেশে যখন মুসলমানরাই মুসলমানদের হত্যা করে তখন আমরা নীরবতা পালন করি কেন? মানবতাবিরোধী অপরাধকে কখনই ধর্ম দিয়ে বিচার করা উচিত নয়। এতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানো ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয় না।

রোহিঙ্গারা এখন বিপদাপন্ন। বিপন্ন। তারা মানুষ। মানবিক ধর্ম সহকারেই তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে, বাঁচাতে হবে। তৈরি করতে হবে তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের পথ। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা যেন সত্যিকার মানুষের ভূমিকাই পালন করি। আর এটা করতে গিয়ে আমাদের দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তার বিষয়টিও উপেক্ষা করা ঠিক হবে না।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর যে চাপ বিশ্ব সম্প্রদায়ের তৈরি করার কথা বাস্তবে তা হয়নি বা হচ্ছে না। রোহিঙ্গারা আর নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে কিনা, সে প্রশ্ন এখন বড় হয়ে উঠেছে। কয়েক দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাবে বাতিল হয়েছে। বাংলাদেশের হয়েছে এখন উভয় সংকট। মানবতার চেয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ অনেক দেশের কাছে বড় হয়ে ওঠায় রোহিঙ্গাদের শরণার্থী জীবন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। সমস্যা বাড়ছে বাংলাদেশেরও। মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগ আরও বাড়াতে হবে।

বিভুরঞ্জন সরকার : সাংবাদিক

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে