বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার ভারতজুড়ে বন্ধে্র ডাক দিয়েছেন দেশটির কৃষকরা।
তবে সাধারণ মানুষের সমস্যা তৈরি না করেই বনধ্ পালিত হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কিষান সংগঠন। খবর বিবিসির।
বিজেপিবিরোধী দলগুলো ইতিমধ্যে কৃষকদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু বনধ চলাকালীন কোনো রাজনৈতিক দলকেই মঞ্চে ওঠার অনুমতি দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা।
ভারতে প্রায় তিন মাস ধরে বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন কৃষকরা। প্রথমে পাঞ্জাবের মধ্যেই আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল।
সপ্তাহ দুয়েক আগে তা এসে পৌঁছেছে রাজধানীতে। দিল্লি-পাঞ্জাব এবং দিল্লি-হরিয়ানা সীমানাতেও অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক। উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকেও দলে দলে কৃষক এসে তাতে যোগ দিয়েছেন।
কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের কথা বলা নেই বলে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। তাদের আশঙ্কা, প্রথমে বেশই দাম হেঁকে তাদের প্রলোভিত করতে পারে বড় বড় সংস্থাগুলো। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের বালাই না থাকায় ফসল কেনার ক্ষেত্রে সরকারও গড়িমসি করতে পারে।
ঠিকমতো টাকা পাওয়া না গেলে মাণ্ডিতে যাওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন কৃষকরা। সে ক্ষেত্রে সব কৃষিপণ্যের একমাত্র ক্রেতা হবে বড় বড় সংস্থাগুলো। বাধ্য হয়ে তাই তাদের ঠিক করে দেয়া দামেই ফসল বিক্রি করতে হবে কৃষকদের।
সরকারের পক্ষ এ নিয়ে মৌখিক আশ্বাস দেয়া হলেও আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় কৃষকরা। তা নিয়ে দফায় দফায় কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে কৃষকদের প্রতিনিধিই দলের। কিন্তু আইন সংশোধনে রাজি হলেও তা প্রত্যাহারে সম্মত হয়নি সরকার। তাই নিজেদের দাবিতেই অনড় কৃষকরা।
এ ব্যাপারে সবার সমর্থন পেতেই ভারত বনধের ডাক দিয়েছেন তারা। বুধবার এ নিয়ে ফের সরকারের সঙ্গে একদফা বৈঠক রয়েছে কৃষকদের। বনধ সফল হলে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আরও সুবিধা হবে বলে মনে করছে কৃষক সংগঠনগুলো।
বিক্ষোভ ঠেকাতে লাঠিপেটা থেকে শুরু করে জলকামান, কোনো কিছুই বাদ রাখেনি পুলিশ। দিল্লির ঠাণ্ডার মধ্যেও সেসব হজম করে যাচ্ছেন কৃষকরা।
সংখ্যার জেরে সংসদে তর্কবিতর্ক এড়িয়ে বিতর্কিত কৃষি বিল পাস করিয়ে নেয় মোদি সরকার। তার পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। কিন্তু নয়া কৃষি আইনের বিরোধিতায় গোটা দেশে অচলাবস্থা তৈরি হবে, তা বোধহয় আঁচ করতে পারেনি কেন্দ্র।
তাই তিন মাস আগে পাঞ্জাবে আন্দোলন মাথাচাড়া দিলেও শুরুতে আমল দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি তারা। কিন্তু সেখান থেকেই স্ফুলিঙ্গ এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। তারই ফলে মঙ্গলবার ভারত বনধ্।