এখন দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারবে না সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কোনো মামলা প্রত্যাহার বা প্রত্যাহারের সুপারিশ সরকার করতে পারবে না বলে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে ঘোষিত এ রায় ঘোষণার কথা আজ রোববার দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান নিশ্চিত করেছেন।

খুরশীদ আলম খান বলেন, একটি টিন চুরির অভিযোগে দায়ের হওয়া দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের ফলে এখন থেকে কোনো দুর্নীতি মামলায় সরকারের আইনি হস্তক্ষেপের আর কোনো সুযোগ থাকলো না।

১/১১ এর সময় দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার বিষয়েও হাইকোর্টের রায়টি সুনির্দিষ্টভাবে সব প্রশ্নের অবসান ঘটালো বলেও জানিয়েছেন দুদকের এই আইনজীবী।

রায়কে যুগান্তকারী উল্লেখ করে খুরশিদ আলম খান বলেন, রায়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালত দুদকের মামলার বিষয়ে কোনো ধরনের নাক না গলানোর সর্তকবার্তা দিয়েছেন। দুদকের মামলা সরকার চাইলেও প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারবে না।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১/১১ এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তখন ফৌজদারিসহ অসংখ্য মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফৌজদারি আইনের ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। একই সময় দুদকের মামলাও প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়।

সে সময় বেশ কিছু ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার হলেও দুদকের মামলায় আইনী প্রশ্ন জড়িত থাকার কারণে কোনো মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু ওই সময়ে সিলেটের ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পাঁচটি টিন চুরির অভিযোগে দুদকের মামলা প্রত্যাহারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে। আদালতও মামলাটি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহারের আদেশ দেন।

এ ঘটনায় ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

আবেদনে বলা হয়, দুদকের মামলা প্রত্যাহার করার আবেদনের প্রক্রিয়াটি আইন অনুযায়ী হয়নি। গত বৃহস্পরতিবার সে আবেদনের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ২০০৪ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা। ফলে দুদকের অনুমোদিত কোনো মামলা প্রত্যাহারে কেউ কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামির আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না সে বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে