দুই শিশু হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

আদালত
ফাইল ছবি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে ৩ জনের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও অপর ৩ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

আদালত একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন।

সোমবার বেলা পৌনে ১২টায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

বিষয়টি আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (এপিপি) খোরশেদ আলম নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- ঢাকার ধামরাই উপজেলার চরহাট গ্রামের শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া, একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন ও মির্জাপুর উপজেলার সুজালিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে মো. রনি মিয়া।

আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আবদুল মালেক, শশ্বধরপট্টি গ্রামের মমরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম, চর চৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহনুর শাহা ও যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- চরচৌহাট্ট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে মো. শামীম মিয়া, একই গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ ও মির্জাপুরের আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের জব্বার মল্লিকের ছেলে মো. জাকির হোসেন।

এদের মধ্যে ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ (২৮) পলাতক। মিল্টন ইমরানে ফুপাতো ভাই ও রনি ইমরানে চাচাতো ভাই।

অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি (এপিপি) খোরশেদ আলম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)। পরে অপহরণের শিকার হন চতুর্থ শ্রেণির এ দুই শিক্ষার্থী।

পরদিন ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

৩০ জানুয়ারি শনিবার এক শিশুর মা মামলা করেন। এরপর ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। বাকি এক আসামি এখনও পলাতক। এ মামলায় পুলিশ ১১ জনের নামে চার্জশিট দেয়। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আসামিরা জড়িত নয়। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করবো।

মামলার বাদি জোসনা বেগম জানান, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

শেয়ার করুন