জাতীয় পতাকা বিকৃত করে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ছয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধায় রংপুর মেট্টোপলিটন তাজহাট থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক এই অভিযোগে লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
অপরদিকে জাতীয় পতাকা বিকৃতি ও অবমাননার অভিযোগে ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের দায়েরকৃত এজাহারে বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে জাতীয় পতাকার নকশা পরিবর্তন করে সবুজের ভেতর লাল বৃত্তের পরিবর্তে চারকোণা লাল আকৃতির পতাকা বানিয়ে পোজ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। এতে সংবিধানের ৪(২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয়েছে। এবং তারা স্বাধীনতা স্মারক চত্তরে উপস্থাপন করে জাতীয় পতাকা মেঝেতে ও পায়ের নিচে স্পর্শ করে ছবি তুলে প্রকাশ করেছে যা সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রদোহিতার অপরাধ করেছে। এতে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের হুকুমের আসামি হিসেবে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহক দায়ী করা হয়। লিখিত অভিযোগে অপর আসামিরা হলেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান, সিন্ডিকেট সদস্য ও গনিত বিভাগের প্রধান হাফিজুর রহমান সেলিম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পরিমল চন্দ্র বর্মণ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হক, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সোহাগ আলী ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রহমতুল্লাহ।
এদিকে সন্ধায় তাজহাট থানায় জাতীয় পতাকা বিকৃত ও অবমাননার দায়ে আরো একটি লিখিত অভিযোগ দেন বেরোবি ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ।
অভিযোগে পতাকার লাল বৃত্তের বিকৃতি ও পায়ের নিচে লাগানোর অভিযোগ আনা হয়। এতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট তাবিউর রহমান প্রধানসহ ৯ শিক্ষককে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত চলছে৷ তদন্ত শেষে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- আরও পড়ুন >> নকশাবহির্ভূত দোকান: কোটি কোটি টাকা লোপাট
এর আগে বিকেলে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে রংপুর যুবলীগের ব্যানারে সেখানে আরো একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জাতীয় পতাকা বিকৃতির দায়ে অভিযুক্তদের চাকরি থেকে বহিস্কারসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানানো হয়।