জলাশয়ে বাধ দেওয়াকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে দুই গ্রামের মানুষের সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বানিয়াচং উপজেলার ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের কামালখানী গ্রাম ও মজলিশপুর গ্রামের সীমান্তে জলাশয়ে বাধ দেওয়ার বিরোধকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সকালে সংঘর্ষ শুরু হয়ে চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে সংঘর্ষ থামান। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে হবিগঞ্জ থেকে দাঙ্গা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আবিদুর, লাল মিয়া, মনছুর, অলি হোসেন, জমির মিয়া, অপু সরকার, নিপু, সাজিদ, নূরুল আমীন, সাজলু, ফজলু, জিলু, নাজমুল, হারুন, জসিম, আনসার মিয়ার অবস্থা গুরুতর।
আহতদের বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর মুমূর্ষূ অবস্থায় নজির মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব ইউপির চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন মিয়া (৫৯) আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কানিভাঙ্গা নামের একটি জলাশয়ে কামালখানী গ্রামের লোকজন বাধ দিলে মজলিশপুর গ্রামের লোকজন শুক্রবার ভোরে সেটি ভেঙে দেয়। পরবর্তীতে কামালখানী গ্রামের লোকজন মজলিশপুর গ্রামের লোকজনকে বাধ এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এতে মজলিশপুর গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আহবান জানায়। এ দিকে কামালখানী গ্রামের লোকজনও মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
- আরও পড়ুন >> ভাঙ্গুড়ায় ট্রাকচাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত
বানিয়াচং থানার ওসি (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দুর্গম হাওরের মাঝে দু‘দল গ্রামবাসী বাধ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ থামাতে কতগুলো রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে সেটার হিসাব তিনি দিতে পারেননি।
ওসি বলেন, সংঘর্ষে আহতদের দেখতে আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে যাচ্ছি। রাতে বসে আহতদের সংখ্যা হিসাব করব।