নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় জাকিয়া বেগম (৫৫) ও নিহা বেগম (১) নামের আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত নববধূসহ ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এখনো নিখোঁজ রয়েছে পাঁচ শিশু।
শনিবার সকালে মেঘনা নদীর পৃথক স্থান থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত জাকিয়া বেগম নলেরচরের আল আমিন গ্রামের নাছির উদ্দিনের স্ত্রী ও নিহা বেগম পূর্ব আজিমপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে।
এখনো নিখোঁজ থাকা শিশুরা হচ্ছে, হাতিয়ার নলেরচর (চানন্দি) ইউনিয়নের আল আমিন গ্রামের নার্গিস বেগম (৪), রুবেল হোসেনের মেয়ে হালিমা বেগম (৫), ভয়ারচর গ্রামের ইলিয়াস উদ্দিনের ছেলে আমির হোসেন (২), ভোলার মনপুরার কলাতলী গ্রামের মাইন উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া বেগম (৩) ও একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আলিফ উদ্দিন (২)।
কোস্টগার্ড হাতিয়ার স্টেশন অফিসার লে. বিশ্বজিৎ বড়ুয়া লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকালে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির পর থেকে নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড হাতিয়ার দুটি ও ভোলার একটি ডুবুরিদল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলাকালে শনিবার সকালে স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় ভোলার গজারিয়া মেঘনা নদী থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় শিশু নিহা ও পরে মনপুরা থেকে জাকিয়া বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। অপর নিখোঁজদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী গ্রামের বেলাল মিস্ত্রির ছেলে ফরিদ উদ্দিন বিয়ে করতে হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের আল আমিন গ্রামে আসে। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর বিকাল ৩টার দিকে ৭০-৭৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারযোগে চানন্দি ঘাট থেকে মনপুরার কলাতলী গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনা নদীর টাংকিরখাল-ঘাসিয়ারচরের মাঝামাঝি এলাকায় তীব্র স্রোতের কবলে পড়ে তাদের ট্রলারটি উল্টে যায়। এসময় ট্রলারে থাকা বর ও নববধূসহ সকল যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েকজন সাঁতার দিয়ে কূলে উঠে এলেও বেশির ভাগ যাত্রী নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা ট্রলার ও নৌকার মাধ্যমে রাত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বরসহ অন্তত ৫৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।