নতুন করোনাভাইরাস আতঙ্ক: ইউরোপ-আমেরিকার শেয়ারবাজারে ধস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউরোপ-আমেরিকার শেয়ারবাজারে ধস

বৃটেনে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি শনাক্তের পর সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা। একের পর এক দেশ থেকে আসছে ব্রিটিশ ফ্লাইট নিষিদ্ধের ঘোষণা। এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ তো বটেই, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও দেখা দিয়েছে নিম্নগতি।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দিনের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ারবাজার এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর সূচক নিচে নেমেছে অন্তত ১ শতাংশ। ডো জোনস এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানশাসিত নাসদাকেরও অনেকটা একই অবস্থা।

এদিকে লন্ডনের এফটিএসই ১০০-এর লেনদেন কমেছে অন্তত ২ শতাংশ। জার্মানি এবং ফ্রান্সের প্রধান শেয়ারবাজারগুলোর সূচক নেমেছে ৩ শতাংশের বেশি।

যুক্তরাজ্যের ওপর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ধস নেমেছে ব্রিটিশ এয়ারলাইনগুলোর শেয়ারে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মালিক আইএজি’র দর কমেছে একধাক্কায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

ইজিজেটের অবস্থা আরও খারাপ। তাদের শেয়ারের সূচক নেমেছে ৯ শতাংশ নিচে।

বিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী রোলস-রয়েসের শেয়ারেও দেখা গেছে বাজে অবস্থা। তাদের সূচক কমেছে অন্তত ৮ শতাংশ।

স্বস্তিতে নেই ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোও। এয়ার ফ্রান্স-কেএলএমের শেয়ারের সূচক কমেছে ৫ শতাংশ। একই পরিমাণ ধস বিমাননির্মাতা এয়ারবাসের।

শুধু শেয়ারবাজারেই নয়, নতুন করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে যুক্তরাজ্যের মুদ্রার মানেও। ইউরোর বিপরীতে ইতোমধ্যেই ১ শতাংশ কমেছে পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মান, মার্কিন ডলারের বিপরীতে তা কমেছে অন্তত ১ দশমিক ৪ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ মহামারির আঘাত সামলে ২০২১ সালে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যে গতি আশা করা হচ্ছিল, নতুন ভাইরাস প্রজাতির কারণে সেই সম্ভাবনা মিলিয়ে যেতে বসেছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। পুরনো প্রজাতির চেয়ে এটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ভাইরাসটি খুব বেশি প্রাণঘাতী বা ভ্যাকসিনের সঙ্গে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, এখনও তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এর আগে, সোমবার ইউরোপের একের পর এক দেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ফ্লাইট বাতিলের খবর আসতে থাকে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রথম ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় নেদারল্যান্ডস। পরে একই পথে হাঁটে বেলজিয়াম, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে কানাডা, ভারত, রাশিয়া।

অস্ট্রিয়া এবং সুইডেন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকে তাদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বুলগেরিয়া এবং চেকপ্রজাতন্ত্রও ব্রিটিশ ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সূত্র: বিবিসি

শেয়ার করুন