আবারও বন্ধ হতে পারে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমান
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট চলাচল আবারও বন্ধ হতে পারে। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে চিন্তা-ভাবনা চলছে। শিগগিরই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্লাইট বন্ধ হবে কী হবে না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রামক নতুন একটি ধরন দেখা দেয়ার পর সব ফ্লাইট চলাচল বন্ধের চিন্তা-ভাবনা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের ফ্লাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপের একাধিক দেশ। সৌদি আরব ও কুয়েত ব্রিটিশ ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এছাড়া রোববার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব। দেশটির স্থল ও সমুদ্র বন্দরের সব প্রবেশও বন্ধ করা হয়েছে। অন্তত এক সপ্তাহ পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

অধিক সংক্রামক নতুন ধরনের করোনাভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মতামত দিচ্ছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারও উদ্বিগ্ন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সোমবার বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেন মারাত্মক আকার ধারণ না করে, সেজন্য এই মুহূর্তে আন্তজার্তিক রুটের সব ফ্লাইট চলাচল ফের বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, প্রথম দফায় সংক্রমণকালে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমেই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়। পরে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ করার ব্যাপারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ মহলে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব মো. মহিবুল হক সোমবার বলেন, আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হবে কি-না কিংবা নির্দিষ্ট কোনো দেশে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হবে কি-না, এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তারা লিখিতভাবে কোনো চিঠি পাননি বলে জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বন্ধ করতে হলে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হতে হবে। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি পাননি বলে জানান।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট সাত হাজার ৩১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ পাঁচ হাজার ৫৭৫ (৭৬ দশমিক ২৪ শতাংশ) ও নারী এক হাজার ৭৩৭ জন (২৩ দশমিক শূন্য ৭৬ শতাংশ)।

এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৩৪৯টি। এ সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৪৭০ জন। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ দুই হাজার ১৮৩ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৪ জন।

শেয়ার করুন