মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে সরকারের সিদ্ধান্তে বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়; তথা দেশের সব সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস হতে চললেও এখনো এসব প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভার্চুয়াল পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখতে বলা হয়েছে। তবে এ নির্দেশনা সারাদেশে কতটুকু বাস্তবায়নযোগ্য তা নিয়ে রয়েছে বহু প্রশ্ন। কেননা মফস্বল এলাকাগুলোতে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে শিক্ষার্থীরা ক্রমেই লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব সমস্যার সমাধানে এখনও কোনো ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত না আসায় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজ কঠিন হুমকির মুখোমুখি।
গত ২৪ আগস্ট থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম চালাচ্ছে দেশের ২২ হাজার কওমি মাদ্রাসা। যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্য ২৫ লক্ষাধিক। আমাদের প্রশ্ন হলো সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি দেশের আলিয়া মাদ্রাসাগুলোকেও অধিকতর সাবধানতার অজুহাতে বন্ধ রেখে শুধুমাত্র কওমি মাদ্রাসাগুলোকে খোলা রাখার সিদ্ধান্তটা কতটুকু যৌক্তিক? এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতে আমাদের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে কিনা তা নিয়ে এখনই জরুরি ভিত্তিতে ভেবে দেখা উচিত। কেননা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকা এবং এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি জটিলতা দেখা দেয়ায় অনেক শহর ও গ্রামাঞ্চলের অনেক ছাত্র-ছাত্রী কওমি মাদ্রাসাগুলোতে ভর্তির দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
কাজেই আমরা মনে করি, সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধ রেখে শুধুমাত্র কওমি মাদ্রাসাগুলোকে খোলা রাখা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য খুবই ক্ষতিকর। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালযের কাছে আমাদে প্রশ্ন হলো- করোনার কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকসহ আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে এর অবসান কবে ঘটবে?