সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৯৪ হাজারের বেশি শিশুকে নিজ ভাষায় পাঠ্যবই তুলে দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির সব বই ও তৃতীয় শ্রেণির শুধু বাংলা বই তাদের দেয়া হবে। একই সঙ্গে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্রেইল বই দেয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, সাদ্রী, ত্রিপুরা ও গারো শিক্ষার্থীদের নিজ ভাষায় পাঠ্যবই তুলে দেয়া হবে। তার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব বই বিশেষ ভাষায় দেয়া হলেও তৃতীয় শ্রেণিতে শুধু বাংলা বই আদিবাসীদের ভাষায় বই পাবে। পরবর্তী শ্রেণি থেকে তাদের সাধারণ শিক্ষায় যুক্ত করা হবে। চলতি বছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় তা পিছিয়ে গেছে।
জানা গেছে, এবার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বই ৯৪ হাজার ২৭৫ জন শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হবে। আর ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর হাতে ব্রেইল বই তুলে দেয়া হবে। আগে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্রেইল বই দেয়া হতো।
এ বিষয়ে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, চলতি বছর সারাদেশে প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। তাদের সঙ্গে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিশুদের নিজ ভাষায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ব্রেইল বই দেয়া হবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজ ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তুলে দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সাওতাল নৃ-গোষ্ঠীদের নিজ ভাষায় বই দেয়ার কথা থাকলেও তাদের মধ্যে একাধিক গ্রুপ থাকায় কোন ভাষায় অক্ষর লিপিবদ্ধ হবে, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এ কারণে এ বছরেও সাওতালদের নিজ ভাষায় বই দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এরই মধ্যে প্রাথমিকের প্রায় শতভাগ ও মাধ্যমিক স্তরের ৭৫ শতাংশ বই জেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব জেলায় শতভাগ পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।