গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া আরও এক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নেয়া হচ্ছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে। চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে এই তথ্য।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে আসা মুসলিম রোহিঙ্গাদের আরও এক হাজারজনকে চলতি মাসে ভাসানচরে নেয়া হবে। এর আগে ডিসেম্বরের শুরুতে ১৬০০ রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়। মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ উপেক্ষা করেই এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করে রয়টার্স।
এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, দ্বিতীয় ব্যাচে রোহিঙ্গাদের প্রথমে চট্টগ্রামে নেয়া হবে, সেখান থেকে জোয়ারের ওপর নির্ভর করে ভাসানচরে পৌঁছানো হবে। বিষয়টি প্রকাশ্যে না আসায় নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন ওই কর্মকর্তা।
শরণার্থীদের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সরকারের একজন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ দোজা জানান, স্থানান্তর করা হবে স্বেচ্ছায়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাউকে পাঠানো হবে না।
এর আগে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ ভাসানচরের প্রযুক্তিগত ও সুরক্ষা মূল্যায়ন করার অনুমতি দেয়া হয়নি এবং সেখানে শরণার্থীদের স্থানান্তরে তারা জড়িত নয়।
তবে বাংলাদেশ সরকার বলেছে, কেবল যারা যেতে ইচ্ছুক তাদেরকেই ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপের ফলে এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে দীর্ঘস্থায়ী ভিড় কমবে।
তবে শরণার্থী এবং মানবিক কর্মীরা দাবি করছেন, ২০ বছর আগে সমুদ্র থেকে উত্থিত দ্বীপে যাওয়ার জন্য কিছু রোহিঙ্গাকে বাধ্য করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন এই মাসের শুরুতে রয়টার্সকে বলেন, ভাসানচরের মূল্যায়ন করার আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ কতটা অনুকূল ছিল তা জাতিসংঘের প্রথমে মূল্যায়ন ও যাচাই করা উচিত।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার একাধিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে সহিংসতার মধ্যে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।