‘গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে এনেছি, মানুষ সুফল পাচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভার্চুয়াল সভা
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য দেশ উন্নয়নের ধারায় ফিরতে পেরেছে এবং জনগণ এর সুফল পাচ্ছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় দেয়া প্রারম্ভিক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫) প্রণয়নে অনুষ্ঠিত এনইসি’র সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ছিল না, হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। একের পর এক সামরিক শাসকরা ক্ষমতায় এসেছে, ক্ষমতাটা ওই ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই বন্দী ছিল। যে কারণে উন্নয়নের গতিধারাটা অব্যাহত থাকেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনতার ক্ষমতা জনতার হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের হাতেই আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি, যার ফলে আমাদের উন্নয়নের গতিধারা যথেষ্ট সচল হয়েছে। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার যে লক্ষ্য ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার, সে লক্ষ্য নিয়েই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বের দরবারে আজ বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ এক সময় বাংলাদেশ বললে লোকজন এমন একটা ভাব দেখাতো যে এই বাংলাদেশ যেন সবার কাছে হাত পেতেই চলে।

সরকারপ্রধান বলেন, যদিও তখন আমি বিরোধী দলে ছিলাম তবুও সেটা আমার আত্মসম্মানে বাঁধতো, কষ্ট লাগতো। কেননা, সারাটা জীবন জাতির পিতা সংগ্রাম করেছেন, কষ্ট করেছেন। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছেন, সেই স্বাধীন দেশকে কেউ এরকম অবহেলার চোখে দেখলে সেটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

এ সময় আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দেয়ায় দেশের জনগণের প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, কেননা তারা আমাদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে। তারা পরপর তিনবার আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে পেরেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যেমন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়েছি তেমনি ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি।

পরবর্তী সময়ে তার সরকার ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত পৃথক প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং শতবর্ষ মেয়াদী ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ থেকে ’৪১ এই সময়ের মধ্যে দেশকে কীভাবে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবো সেজন্য আরও কয়েকটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। যার মধ্যে আজ অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা সরকারে থাকি বা যারাই থাকুক তারা যদি এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে বাংলাদেশকে আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।

জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে যান সেখান থেকে তার সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব যেখানে একেবারেই থমকে গেছে সেখানে বাংলাদেশ তার অর্থনীতির গতিধারা সীমিত আকারে হলেও চলমান রাখতে পেরেছে। যদিও কাঙ্ক্ষিত ৮ দশমিক ২ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়নি, তারপরও সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। এজন্য তিনি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শেয়ার করুন