অপুর স্বামীর জায়গায় শাকিবের নাম নিয়ে বিতর্ক

বিনোদন প্রতিবেদক

অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় ও সর্বাধিক ছবির জুটি শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের ডিভোর্স হয়েছে ২০১৮ সালের মার্চে। প্রায় তিন বছর ধরে তাদের পরিচয়, তারা সাবেক স্বামী-স্ত্রী। মাঝে মাঝে যাও তাদের দেখা হয়, তবে সেটা এ জুটির একমাত্র সন্তান ছেলে আব্রাম খান জয়ের সুবাদে। সাবেক স্ত্রীর প্রতি টান না থাকলেও ছেলেকে দেখতে ঠিকই মাঝে মাঝেই ছুটে যান নায়ক শাকিব খান।

কিন্তু স্বামী হিসেবে সেই শাকিবেরই নাম ব্যবহার করে সম্প্রতি বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। সম্প্রতি তিনি প্রযোজক হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। প্রযোজক সমিতিতে নিজের নাম নিবন্ধনও করেছেন। পাশাপাশি ‘অভিমান’ নামে একটি ছবিও নিবন্ধিত করেছেন। তবে তিনি বিতর্কের জন্মটি দিয়েছেন সমিতির সদস্যপদ নেয়ার ক্ষেত্রে।

universel cardiac hospital

প্রযোজক সমিতির বিধি অনুযায়ী, নতুন কেউ সদস্যপদ নিতে চাইলে এক লাখ তিন হাজার টাকা জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে। তবে যদি ওই ব্যক্তি কোনো প্রযোজকের স্বামী-স্ত্রী বা সন্তান হন, সেক্ষেত্রে মাত্র ১১ হাজার টাকা ফি দিয়েই তিনি সদস্যপদ নিতে পারবেন। অপু বিশ্বাসই এই সুযোগটাই নিতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। কারণ, আবেদনপত্রে তিনি স্বামীর নামের জায়গায় শাকিব খানের নাম ব্যবহার করেছেন।

অপুর এই কাণ্ডে বর্তমানে সরগরম এফডিসিপাড়া। যদিও পরবর্তী সময়ে সংশোধনের মাধ্যমে এক লাখ তিন হাজার টাকা জমা দিয়ে সদস্যপদ নিয়েছেন অপু বিশ্বাস। কিন্তু তাতে আলোচনা থামেনি। অপুর এই চালাকিকে ভালোভাবে নেননি প্রযোজক সমিতির কর্তারা। যার কারণে প্রথমে তার আবেদনপত্রটি ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং অভিনেত্রীকে জানানো হয়, তিনি যদি তার আবেদপত্রটি সংশোধন করেন এবং পুরো ফি জমা দেন তবেই সমিতিতে সদস্যপদ পাবেন।

অবশেষে সমিতির কর্তাদের শর্ত মেনে প্রযোজক হিসেবে দুদনি আগে নিজের নাম নিবন্ধন করেছেন অপু বিশ্বাস। শুধু তাই নয়, আবেদনপত্রে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য তাকে কোনো ধরনের ব্যাখ্যাও দিতে হয়নি। যদিও প্রযোজক সমিতির কর্তারা বুঝতে পেরেছেন, অপু কেন এই চালাকিটা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রযোজক–পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম বলেন, ‘আমরা অপুর কাছে কোনো ব্যাখ্যা জানতে চাইনি। কারণ বুঝতে পেরেছি, মিথ্যা তথ্য দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তিনি লজ্জিত হয়েছেন। যেহেতু তিনি দেশের একজন ভালো অভিনেত্রী, দেশের চলচ্চিত্রে তার অবদানও অনেক- তাই এসব দিক বিবেচনা করে তাকে আর বিব্রত ও লজ্জা দিতে চাইনি। যদিও আমরা তার কাছে ব্যাখ্যা চাইতে পারতাম। কিন্তু আমরা আর সেদিকে যাইনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপু বিশ্বাস তার ও ছেলে জয়ের নামের সঙ্গে মিল রেখে তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম রেখেছেন ‘অপু-জয় প্রোডাকশন হাউস’। নতুন এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘অভিমান’ নামে একটি ছবির নামও নিবন্ধন করেছেন। ছবিটি সরকারি অনুদানের জন্য জমা দিতে চান অপু বিশ্বাস।

কিন্তু প্রযোজক সমিতির সদস্যপদ পেতে জনপ্রিয় এই নায়িকা তার সাবেক স্বামী শাকিব খানের নাম কেন ব্যবহার করলেন? এ প্রসঙ্গে জানতে অপুর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফোন করে পাওয়া যায়নি শাকিব খানকেও।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল গোপনে বিয়ে করেন রেকর্ড ৭০টিরও বেশি ছবির জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল কলকাতার একটি হাসপাতালে জন্ম য় তাদের একমাত্র সন্তান জয়ের। এ ব্যাপারটিও গোপন ছিল। অবশেষে পরের বছরের ১০ এপ্রিল ছেলেকে নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে সবকিছু ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। জানান, শাকিবের সঙ্গে তার বিয়ে ও সন্তান জন্মদানের কথা।

এর পর থেকেই শাকিবের সঙ্গে তার দূরত্বের বিষয়টিও সামনে চলে আসে। যেটা গড়ায় ডিভোর্স পর্যন্ত। নানা অভিযোগ তুলে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর আইনজীবীর মাধ্যমে অপু বিশ্বাসকে তালাকের নোটিশ পাঠান শাকিব খান। এরপর জনপ্রিয় এ জুটির সংসার টেকাতে দুই দফায় সালিশি বৈঠক ডাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। কিন্তু অপু উপস্থিত হলেও একটি সালিশেও উপস্থিত ছিলেন না শাকিব। ফলে ২০১৮ সালের ১২ মার্চ তাদের তালাক কার্যকর হয়ে যায়।

শেয়ার করুন