ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর, নতুন যুগে যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর, নতুন যুগে যুক্তরাজ্য
ছবি : ইন্টারনেট

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন পেয়ে আইনে পরিণত হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিটি কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে ৪৭ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়া যুক্তরাজ্যের নতুন যুগের সূচনা হলো।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর পাঁচটা থেকে কার্যকর হয় ইইউ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি। এখন থেকে ভ্রমণ, অভিবাসন, বাণিজ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন না মেনে নিজেদের আইনে চলবে যুক্তরাজ্য।

universel cardiac hospital

গত বছরের জানুয়ারি শেষের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাজ্য। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে, তার রূপরেখা নির্ধারিত ছিল না। অবশেষে প্রায় এক বছর পর এ ক্ষেত্রে সমাধান মিলল।

গত বুধবার হাউস অব কমন্সে ৫২১-৭৩ ভোটে বিলটি অনুমোদন পায় এবং রাণীর সম্মতিতে চুক্তিটি যুক্তরাজ্যের আইনে পরিণত হয়।

চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, স্বাধীনতা এখন নিজেদের হাতে। এখন আরোও ভাল ও স্বাধীনভাবে নিজেদের দেশ গড়া যাবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে গেলেও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও মিত্রতার সম্পর্ক থাকবে।

কয়েক মাসের বিরোধ ও অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে বড়দিনের আগের দিন ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে একমত হয় যুক্তরাজ্য ও ইইউ।

এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর এই চুক্তি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেন ইইউ’র ২৭টি সদস্যদেশের রাষ্ট্রদূতরা। পরে ইইউ’র শীর্ষ কর্মকর্তারা চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সই করার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সেটি অনুমোদন করে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে যুক্তরাজ্যে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে ব্রিটিশদের জীবনযাত্রায়। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ব্রিটেনের যে ৭৩ জন সদস্য ছিলেন এখন তারা সদস্যপদ হারাবেন। ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার ফলে তারা তাদের সদস্যপদ হারাচ্ছেন। কারণ ব্রিটেন একই সাথে ইইউর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সিগুলোও ছেড়ে গেল।

তবে যেহেতু ব্রিটেন অন্তর্বর্তী সময়ে ইইউর আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে চায়, সেহেতু ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস আইনি সমস্যাগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত দেয়া অব্যাহত রাখবে। ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল সামিটে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অংশ নিতে চাইলে তার জন্য বিশেষ আমন্ত্রণ প্রয়োজন হবে।

২০১৬ সালের গণভোটে ৫২ শতাংশ জনগণ ব্রেক্সিটের পে রায় দেয়ার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রথমে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে বিচ্ছেদ সম্পন্নের তারিখ ঠিক করেছিল; কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সাথে ইইউর চুক্তি পার্লামেন্টে কয়েক দফা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ব্রেক্সিট কার্যকরের এ সময়সীমা বাড়ানো হয়। থেরেসা পরে দায়িত্ব ছেড়ে দিলে জনসন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন; কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী হিসেবে পরিচিত এ টোরি নেতা কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন ডাকেন। ডিসেম্বরের ভোটে বিপুল জনসমর্থন লাভের পর তার সাথে ইইউর চুক্তিটিও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়।

শেয়ার করুন