ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য বাংলাদেশ সরকার আগামীকাল (৩ জানুয়ারি) ৬০০ কোটি টাকার বেশি জমা দেবে ব্যাংকে। বিনিময়ে সেরাম ইনস্টিটিউট একটি ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অগ্রিম টাকা হিসেবে এটা নেবে এবং বাকি টাকা টিকা সরবরাহ শুরু করার পর দেয়া হবে। চুক্তির ধারা অনুযায়ী তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে বাংলাদেশে অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে। খবর বিবিসি বাংলার।
সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনতে পারবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
গতকাল শনিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের সরকার। সুতরাং ভারতের ওই টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে টিকা আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।
এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য। তারই ধারাবাহিকতায় এই কাজ হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যেকোনো টিকার দুটি দিক রয়েছে। একটা টিকা দেশে আনা এবং দ্বিতীয় হলো ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া।
স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, এটার ব্যাপারে আইনি অনেক বাধ্যবাধকতা আছে, অনেক রকম আইন আছে আপনারা জানেন। তবে এটা যাতে সরাসরি ক্রয় করা যায় সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনুমোদন দিয়েছেন।
টিকা আনার পর সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইন মেইনটেন করতে হবে। সেজন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে অধিদপ্তর।
তারা (বেক্সিমকো) জেলা পর্যায়ে যেসব ডিপো রয়েছে কোল্ড চেইন মেইনটেন করার সক্ষমতা আছে সেই জায়গাগুলোতে পৌঁছে দেবে। টিকা দেয়ার জন্য সারাদেশে ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করবেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে।
‘তারপরেও আমাদের বলা হয়েছে যেগুলো অফিসিয়াল প্রসিডিউর আছে সেগুলো মেইনটেন করতে। আমরা সেগুলো করবো। আইনে যা আছে সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি এবং অনুমোদন অবশ্যই লাগবে আমরা সেটার ব্যবস্থা করবো’ বলছিলেন আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) রাব্বুর রেজা বলছিলেন, টিকা ভারত থেকে আনার পর কোল্ড চেইন টঙ্গীতে তাদের দুটি ওয়্যারহাউসে নেয়া হবে। এরপর সরকার অনুমোদিত ওয়্যারহাউসগুলোতে আমরা পৌঁছে দেয়া হবে। এই ডেলিভারির মধ্যে দিয়ে বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হবে। এরপর শুরু হবে বিতরণ প্রক্রিয়া, যেটি হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।
চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট ছয় মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। প্রতিমাসে ৫০ লাখ টিকা আসবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা টিকা পাবেন সেটা একটা প্রাথমিক তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করা হয়েছে।