‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন একটা শঙ্কর গণতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের কথা বলা হয় কিন্তু গণতন্ত্র নেই। আসলে গণতন্ত্রের ছদ্মাবেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আছে। আমরা চেষ্টা করছি, আমরা কথা বলছি। আমরা বেরিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’-বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য বলেন।
নতুন বছরের প্রত্যাশা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা চাই এই বছর অনেক সুন্দর হয়ে আসবে। করোনাসহ সবকিছু মিলিয়ে আমাদের জীবন যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা স্বপ্ন দেখতে চাই, সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চাই, আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের ওপর ভিত্তি করে স্বাধীন জনগণের জন্য একটি রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্র হবে বহুদলীয়। অর্থাৎ আমাদেরকে অবশ্যই ভিন্নমতকে ধারণ করতে হবে, অন্যের কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে-সেইভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ২০২১ সাল আমাদেরকে সেই পথ দেখাক। এটা আমাদের প্রত্যাশা।
ফখরুল বলেন, আমরা কোনো প্রভুতে বিশ্বাস করি না, আমরা কারো পদানত হতে চাই না, আমরা সেবাদাসে পরিণত হতে চাই না। আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে চলতে চাই। এটাই হচ্ছে আমাদের রাজনীতি, এই রাজনীতি চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ করতেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে একটা হাইব্রিড রেজিমের দেশ। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার, জনগণের সংসদ, জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।
- আরও পড়ুন >> ইউএনওদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সংবাদ সম্মেলন
তিনি বলেন, আজকে দেশের গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়া বন্দিজীবন যাপন করছেন। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, পাঁচশ’র উপরে মানুষ গুম হয়ে গেছে, এখানে হাজারের উপরে মানুষ খুন হয়েছে। এরা কিন্তু রাজনৈতিক নেতাকর্মী। এমনকি ১৫৭ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গত বছর ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাহলে কোথায় গণতন্ত্র? আমাদের এখানে সবই আছে, এখানে সরকার আছে। বলা হয় গণতন্ত্র আছে, জাতীয় সংসদ আছে, বুরোক্রেসি আছে কিন্তু মানুষের অধিকার নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন যে, ভোট ডাকাতিতে বিএনপির রেকর্ড নাকী কেউ ভাংগতে পারবে না। তিনি কী ভাঙতে চান? তিনি এই জিনিসটা ভাঙতে চান বলেই ২০১৮ সালে চরম ভোট ডাকাতি করেছেন ভোটের আগের রাতে? এই কোন সমাজে আমরা আসলাম? এই কোন রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি, যেখানে আমাদের রাজনীতিবীদরা বলছেন যে, তারা ভোট ডাকাতির রেকর্ড ভাঙতে চান। এভাবে যদি আমরা এগুতে থাকি তাহলে কোনোদিনই আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যে স্বপ্ন ছিলো, সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়িত করতে পারবো না।