দুই ঘণ্টার ব্যবধানে রাতের আঁধারে দেশের দুই জেলায় আগুনে পুড়েছে দুটি বাস। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় বাস দুটিতে আগুন দেয়া হয়। কোনো ধরনের দুর্ঘটনার কারণে বাস দুটিতে আগুন লেগেছিল, না কোনো দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়েছে তা এখনো জানাতে পারেনি পুলিশ। দুটি ঘটনায় কোনো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেললেও পুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাস দুটিকে রক্ষা করতে পারেনি। মত ও পথের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাসস্ট্যান্ডের দুর্জয় মোড়ে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লেগে পুড়ে যায়। আগুনে কোনো যাত্রী হতাহত হয়নি। ঘটনার পর বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ও ফায়ার কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। কিভাবে বাসটিতে আগুন লাগাল তা কেউ বলতে পারছেন না। ঘটনাটি নাশকতা না দুর্ঘটনা পুলিশ তদন্ত করবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা সুপার পরিবহনের একটি বাস রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড়ে পৌঁছায়। হঠাৎ বাসের পেছনের অংশে আগুন দেখতে পায় পথচারীরা। চালক আগুনের দেখতে পেয়ে বাসটি থামালে যাত্রীরা যানটি থেকে নেমে পড়েন। খবর পেয়ে ভৈরব থানা ও ভৈরব হাইওয়ে থানা পুলিশ দ্রুত বাসস্ট্যান্ডে ছুটে যায়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও ১৫ মিনিটের মধ্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধা ঘণ্টার মতো চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। যাত্রীরা দ্রুত নেমে যাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
কিভাবে বাসটিতে আগুন লাগল তা কেউ বলতে পারছেন না। এটা নাশকতা হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। তবে পুলিশ ঘটনাটিতে নাশকতা বলতে নারাজ। পুলিশ বাসটি রেকার দিয়ে রাত ১১টায় ভৈরব হাইওয়ে থানায় নিয়ে যায়।
ভৈরব ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিব হোসেন জানান, বাসের পেছন দিকে বেশি পুড়েছে। এতে মনে হয় পেছন দিক থেকে আগুনটি লেগেছে। কিভাবে আগুনের ঘটনা ঘটল তা চালক ও তার সহকারীই বলতে পারবে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন জানান, বাসের চালক, তার সহকারী ও যাত্রীরা চলে যাওয়ায় আগুনের ঘটনাটি কিভাবে ঘটল তা প্রতক্ষ্যদর্শীদের কেউ বলতে পারছেন না।
ঘটনাটি নাশকতা কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ঘটনা তদন্ত করা হবে। এই ঘটনায় থানায় পুলিশ বাদী হয়ে জিডি করবে বলে তিনি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, রাতে তিশা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিল। বিশ্বরোড মোড়ে যাত্রী নামিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে যাচ্ছিল। বেতবাড়ীয়া নামক স্থানে যাবার পর বাসটির পেছনের দিকে হঠাৎ করে আগুন লাগে। এ সময় বাসের চালক হেলপারসহ অন্য যাত্রীরা দ্রুত বাস থেকে নেমে যায়। মুহূর্তে আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে সরাইল ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগে পুরো বাসটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। দ্রুত সকল যাত্রী নেমে যাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এই দুর্ঘটনায় কোনো যাত্রী হতাহত হয়নি। এ ঘটনার পর সড়কটিতে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, কেন, কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এরপরই বিস্তারিত জানা যাবে।