ভারতের দক্ষিণী অভিনেত্রী ইলিয়ানা ডি ক্রুজ সফলতা পেয়েছেন বলিউডেও। অভিনয় এবং আবেদনময়ী লুকে নজর কেড়েছে দর্শকের। এই অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন যে, যৌনতাই তাকে তরুণ রাখে।
মায়ের কাজের জায়গা ছিল গোয়ার যে হোটেল, সেখানে প্রায়ই যেতেন ইলিয়ানা। হোটেলের ম্যানেজার কিশোরী ইলিয়ানাকে প্রস্তাব দেন মডেলিং শুরু করার। কিন্তু ইলিয়ানা সেই প্রস্তাবে গুরুত্ব দেননি প্রথমে।
ক্লাস টুয়েলভে পড়ার সময় থেকেই স্থানীয় স্পা এবং অন্য সংস্থার হয়ে মডেলিং শুরু করেন ইলিয়ানা। সেসময় নিজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করে মার্ক রবিনসনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কিন্তু প্রথম দর্শনেই সেই পোর্টফোলিও বাতিল করে দেন মার্ক। বলেন, ছবিতে যা দেখাচ্ছে তার থেকে ইলিয়ানা অনেক বেশি সুন্দরী।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয়ের একটা ছোটখাটো কোর্স করেন ইলিয়ানা। ২০০৬ সালে তিনি সুযোগ পান দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে। সে বছরই মু্ক্তি পায় তার প্রথম তেলুগু ছবি ‘দেবদাসু’। ছবিতে রাজি হওয়ার প্রধান কারণ ছিল বিদেশে দেড় মাস শুটিং পর্ব। পাশাপাশি পারিশ্রমিকও ভালো ছিল।
প্রথম ছবি সুপারহিট হওয়ার ফলে তার আর সুযোগের অভাব হয়নি। একটা ছবির শুটিং শেষ হওয়ার আগেই নতুন ছবির অফার পেতেন তিনি। একসঙ্গে তিন-চারটি ছবিতেও অভিনয় করতেন তিনি।
সেসময়ে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে একাধিক নায়কের সঙ্গে তার সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রভাস। তবে প্রথমে তারা দুজনেই এই গুঞ্জন অস্বীকার করেন।
পরে ইলিয়ানা এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি দক্ষিণের এক সুপারস্টারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু পরে তার কাছে তিনি প্রতারিত হন বলে ইলিয়ানার দাবি। এরপর তিনি নিজেকে আরও কাজে ডুবিয়ে দেন। তিনি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়িকা হয়ে ওঠেন।
সাফল্য সত্ত্বেও বেশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেননি ইলিয়ানা। পরিবর্তে তিনি বেছে বেছে কাজ করতেই ভালোবাসেন। এ বছরই তাকে দেখা যাবে দুটি হিন্দি ছবিতে। হর্ষদ মেটার জীবন নিয়ে তৈরি ‘দ্য বিগ বুল’ ছবিতে তিনি অভিনয় করছেন অভিষেক বচ্চনের বিপরীতে। রণদীপ হুডার সঙ্গে কাজ করবেন ‘আনফেয়ার লাভলি’ ছবিতে।
তার অভিযোগ, কোনো নায়ক বা পরিচালক বা প্রযোজকের প্রেমিকা না হওয়ার জন্য বহু ছবি থেকে শেষ মুহূর্তে তিনি বাদ পড়েছেন। এর ফলে তিনি অবসাদেরও শিকার হয়ে পড়েন।
ইন্ডাস্ট্রির বাইরে অস্ট্রেলীয় ফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু নিবোনের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন ইলিয়ানা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যান্ড্রুকে তার স্বামী বলেও পরিচয় দিতেন নায়িকা। অনুরাগীরা ধরে নিয়েছিলেন, তাদের গোপনে বিয়ে হয়ে গেছে। তার ভারী চেহারা দেখে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, তিনি কি সন্তানসম্ভবা? সব জল্পনা উড়িয়ে দেন ইলিয়ানা নিজেই। ২০১৯ সালে শোনা যায় তাদের বিচ্ছেদের খবরও।
অ্যান্ড্রু বিবাহিত এবং তিন সন্তানের বাবা ছিলেন। সব জেনেও ইলিয়ানা এই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। ব্রেক আপের পরে ইলিয়ানা গভীর অবসাদের শিকার হন। মানসিক অবস্থা স্বাভাবিক করতে তিনি থেরাপিস্টের দ্বারস্থ হন।
তবে খ্যাতির পাশাপাশি এসেছে বিতর্কও। যৌনতা নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে বরাবরই তিনি স্পষ্টবাদী। একবার বলেছিলেন, যৌনতা তার কাছে রিল্যাক্সেশনের অন্যতম মাধ্যম। যৌনতা নাকি তাকে তরুণী থাকতে সাহায্য করে। যৌনতা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও তিনি কুণ্ঠাহীন।