প্রসঙ্গ: ডাকটিকিটে ছাত্রলীগের ইতিহাস বিকৃতি

সম্পাদকীয়

মোকতাদির চৌধুরী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ডাক বিভাগ। ডাকটিকিটের ওপর সংশ্লিষ্টরা লিখেছে ‘৪ জানুয়ারি ২০২১, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’। এ প্রসঙ্গে বলতে হয়, ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’ হলো প্রতিষ্ঠাকালীন খসড়া নাম। পরবর্তীকালে এই নামটি সংশোধিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ হয়ে উঠে। কিন্তু প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে অদ্যাবধি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এটিকে কখনোই মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসেবে উদযাপন করা হয়নি। আর সেজন্যই ডাকটিকিটে ‘মুসলিম’ শব্দটির ব্যবহার নিয়ে আমাদের আপত্তি।

তৎকালীন সময় থেকে অদ্যাবধি ছাত্রলীগের যতগুলো ভাগ-ই হয়ে থাকুক না কেন মুসলিম ছাত্রলীগ শব্দটি শুধুমাত্র মুসলিম লীগার এবং পাকিস্তানপন্থীরা ছাড়া কেউ কোথাও ব্যবহার করেননি। তখন মৌখিকভাবে পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ সংগঠন হিসেবে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সাংগঠনিক ও গঠনতান্ত্রিকভাবে কখনোই পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের অস্তিত্ব ছিল না। সুতরাং ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বাষির্কীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত করে ‘৪ জানুয়ারি ২০২১, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ নামে ডাকটিকিট ও খাম অবমুক্ত করা ইতিহাসের বিকৃতি ছাড়া আর কিছু নয়।

universel cardiac hospital
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছে ডাক বিভাগ।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছে ডাক বিভাগ। ছবি: সংগৃহীত

আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নামে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে কোনো কিছু চালু বা প্রকাশ করার পূর্বে সংগঠনটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের যথাযথ অধ্যয়ন করা উচিত। এছড়াও ছাত্রলীগের ইতহাস বিকৃতির দুঃখজনক ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে শিগগিরই সংশোধনী প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন