ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কলা অনুষদ পরীক্ষা নেবে কি না সিদ্ধান্ত ১৩ জানুয়ারি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ
ফাইল ছবি

আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের প্রায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের চেয়ারম্যানের কাছে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন। তাদের আবেদনসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনায় বসেও বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানরা সম্মিলিত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।

অনুষদের ডীন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিভাগ চেয়ারম্যানদের ভার্চুয়াল এ সভা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেশ কিছু বিভাগের চেয়ারম্যানরা শিক্ষার্থীদের আবেদনের পক্ষে অর্থাৎ হল না খুলে পরীক্ষা না নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

সভা সুত্রে জানা যায়, হল না খুলে পরীক্ষা না নিতে শিক্ষার্থীদের আবেদনের সঙ্গে একমত হয়েছেন বিভাগের প্রায় সকল চেয়ারম্যান। তবে কয়েকটি বিভাগের চেয়ারম্যানরা পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। অনুষদের অন্যতম ইংরেজি বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগ এরই মধ্যে আপাতত পরীক্ষা না নেয়ার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে। তবে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আগামী ১৩ জানুয়ারি ডিনস কমিটির মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড মো. শামছুল আলম বলেন, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার আমরা আমাদের মধ্যে একটি আলোচনা করেছি। শিক্ষার্থীরা যে হল না খুলে পরীক্ষায় বসতে চাচ্ছে না সে ব্যাপারে সভায় আমরা সকল চেয়ারম্যান মোটমুটি একমত হয়েছি। তবে ১৩ তারিখ ডিনস কমিটির মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

তবে ভিন্ন কথা বলছেন ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নেভিন ফরিদা। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনুরোধ ছিলো তারা হল না খোলার আগে পরীক্ষা দিতে পারবে না। তাদের অনুরোধ বিবেচনা করে পরীক্ষা পোস্টপন্ড করা হয়েছে; অর্থাৎ বিভাগগুলো থেকে পরীক্ষার যে ডেট দেয়া হয়েছে সে তারিখে পরীক্ষা হবে না।’

এই সিদ্ধান্ত ডিনস কমিটির মিটিংয়ে যাবে কি না জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের প্রধান বলেন, ‘মিটিংয়ে এ বিষয়গুলো শুধু ভার্বালি বলা হয়েছে। আর আমরা সেভাবে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দিচ্ছি। ফরমালি যেহেতু আমাদের কাছে কিছুই লিখিত আসেনি, তাই এগুলো ডিনস মিটিংয়ে যাবে কি যাবে না সেটি আমি বলতে পারবো না।’

ড. নেভিন ফরিদা বলেন, ‘সভায় কয়েকটি বিভাগের চেয়ারম্যান পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। আমরা বলেছি এটা বাস্তবসম্মত না। শিক্ষার্থীদের তো কিছু সময় দিতে হবে। তাই পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করা হবে কালেক্টিভ ডিসিশনটা রাখার।’

ইংরেজী বিভাগ সুত্রে জানা যায়, মাস্টার্স এবং অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে, অনার্স দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারীর ৫ তারিখ থেকে এবং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ১৮ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো। তবে বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ের পর ঘোষিত তারিখে পরীক্ষা হবে না বলে মৌখিকভাবে জানিয়ে পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে বলে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে।

এদিকে পরীক্ষা না হওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগে আমরা সিদ্ধান্তগুলো ফাইনালাইজ করবো, তারপর প্রিন্ট করবো। এরপর বিভাগ চেয়ারম্যানবৃন্দের কাছে পাঠাবো। তারপরই সিদ্ধান্ত। মিটিংয়ের সিদ্ধান্তসমূহ যে পর্যন্ত রেভ্যুলেশন আকারে না যায় সে পর্যন্ত সেটা কোনো সিদ্ধান্ত না।’

শেয়ার করুন