‘যুক্তরাষ্ট্রে এই আন্দোলন কৃষ্ণাঙ্গরা করলে শত শত লাশ পড়ত’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব
মার্কিন কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব। ছবি : ইন্টারনেট

বুধবার ক্যাপিটল হিলের তাণ্ডবে প্রকাশ্য জাতিগত বৈষম্য দেখতে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন, রাজনীতিবিদসহ রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির বাসিন্দারা। এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি ‘কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।

সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা ভবনে (ক্যাপিটল হিল) কংগ্রেসের অধিবেশনে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিকতা অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা হামলা চালায়। তারা আইনপ্রণেতাদের বাধ্য করে সিনেটের অধিবেশন বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে।

universel cardiac hospital

ওইদিন দাঙ্গাকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে, জানালা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে, স্মরণিকা ছিনতাই করে। তারা কংগ্রেসের সভাকক্ষে প্রবেশ করে এবং অনেকে পুলিশের সঙ্গে ছবিও তোলে। আবার কেউ কেউ চলে যাবার সময় ট্রফি হাতে করে নিয়ে যায়।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সমর্থকদের সপ্তাহব্যাপী হুমকি-ধামকির পরও ক্যাপিটল হিলে নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল এবং পুলিশের প্রতিক্রিয়াও ছিল সীমিত। ছয় মাস আগে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্লাক লাইভস ম্যাটার স্লোগানে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের তুলনায় বুধবার ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবে পুলিশের ভূমিকা স্পষ্টত পার্থক্য ছিল।

এ প্রসঙ্গে রাজধানী ওয়াশিংটনের বাসিন্দা এবং ব্লাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারী ব্রিটিস ম্যান্ডো বলেন, আমার মা বলেছে, এমন আন্দোলন যদি আমরা কৃষ্ণাঙ্গরা করতাম তাহলে গুলি চালানো হতো। আমার মা সঠিকই বলেছেন। যদি কৃষ্ণাঙ্গরা এই আন্দোলন করতো তাহলে সেখানে শত শত লাশ পড়ে থাকতো।

এদিকে, বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেনও এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, কেউ আমাকে বলতে পারবে গতকাল ক্যাপিটলে যারা তাণ্ডব চালিয়েছে তারা যদি ব্লাক লাইভস ম্যাটার গোষ্ঠীর হতো তাহলে তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন আচরণ করা হতো না।

নয় মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসের পুলিশ কর্মকর্তার কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লোয়েডের হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। সেই আন্দোলনকারীরা বলেছেন, পুলিশ ট্রাম্প সমর্থকদের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন আচরণ করেছে।

ব্লাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যাবি কোনেজো (২৯) বলেন, আমাদের আন্দোলনের সময় রাজধানীর প্রতিটি সংযোগ, ভবন, ক্যাপিটল এবং হোয়াইট হাউসের সামনে পুলিশ ছিল। ব্লাক লাইভস আন্দোলনকারীরা রাজধানীতে মাস্ক পরিহিত ন্যাশনাল গার্ডের বাধার সম্মুখীন হন। ট্রাম্প আন্দোলনকারীদের নীতিহীন ও গুণ্ডা উল্লেখ করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ করে স্মোক ক্যানিটর ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

পুলিশ কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করেছিল উল্লেখ করে অ্যাবি কোনেজো বলেন, ‘ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবে পুলিশের সেই রাগ ও তেজ কোথায় ছিল?’ কেন তাণ্ডবকারীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করা হলো সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি।

শেয়ার করুন