আইনের সংস্পর্শে আসা কিশোরদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পুলিশের সীমাবদ্ধতা ও আইনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, প্রবেশন অফিসার নেই, তাহলে কি আমরা গ্রেপ্তার করব না? কারেকশন সেন্টার নেই। তাহলে কি গ্রেপ্তার বন্ধ থাকবে?
আজ সোমবার ওই অনুষ্ঠানে মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব প্রশ্ন তুলেন। সেখানে কিশোরদের অপরাধে জড়িয়ে পড়া নিয়েও কথা বলেন তিনি। পুলিশের আইজিপি বলেন, কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রীর ক্ষেত্রে যেটি ঘটেছে, সেই ঘটনাটি “পূর্ণাঙ্গ ক্রাইম”। এখানে হত্যা ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে।’
র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে কিশোরদের মধ্যে গ্যাং কালচারের বিস্তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে আইনের ভিন্ন ভাষ্য রয়েছে। নিয়ম হচ্ছে, কিশোরদের গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ামাত্রই প্রবেশন অফিসারকে যুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশে প্রবেশন অফিসারের সংকট, সংশোধন কেন্দ্রের সংকট। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, এখানে গেলে শুনি কিশোর গ্যাং, ওখানে কিশোর গ্যাং। প্রবেশন অফিসার নেই, তাহলে কি আমরা গ্রেপ্তার করব না? কারেকশন সেন্টার নেই। তাহলে কি গ্রেপ্তার বন্ধ থাকবে?’ তিনি বলেন, সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্রের উপযোগী করে সন্তানদের গড়ে তোলার দায়িত্ব পরিবার ও রাষ্ট্রের। সেই দায়িত্ব নিতে হবে।
ওই সময় পরিবারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, কিশোরদের বিপথগামী হতে দেওয়া যাবে না। কিশোর গ্যাং নামে কোনো দৌরাত্ম্য চলতে পারে না। আমাদেরকে এ ধরনের যেকোনো দৌরাত্ম্য মোকাবিলা করতে হবে। ছেলে বা মেয়ে কোথায় যায়, কী করে সেই খোঁজ অভিভাবকদের রাখতে হবে।
তিনি বলেন, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল জরুরি। সন্তান জন্ম দিয়েছেন, দায়দায়িত্ব নিতে হবে। এটা পরিবারের সামাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। সন্তানদের মধ্যে নৈতিকতা, মূল্যবোধের সঞ্চার করার দায়িত্ব পরিবারের, সমাজের।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও আগামী প্রজন্মের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, তোমরা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হবে। তোমাদেরকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে, নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
করোনাকালে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। তিনি বলেন, সেবা সপ্তাহে র্যাব এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেছে, দরিদ্রদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেছে, বৃক্ষরোপণ করেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তারা জনগণকে সেবা দেওয়ার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সেবাকে কোনো নির্দিষ্ট দিন, সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে প্রতিটি দিনকে সেবার দিনে পরিণত করতে হবে।