ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুজন বাদী হয়ে মানহানির যে দুটি মামলা করেছেন সেগুলোর সঙ্গে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এজন্য তিনি মামলা দুটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনে সাকরাঈনের (ঘুড়ি উৎসব) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র এই আহ্বান জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘গতকাল যে দুটি মামলা হয়েছে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুজন আইনজীবী অতি উৎসাহী হয়ে মামলা করেছেন৷ আমি তাদেরকে আনুরোধ করব তারা যেন মামলা প্রত্যাহার করে দেন।’
মেয়র বলেন, ‘সাবেক মেয়র মহোদয় ব্যক্তিগতভাবে আক্রোশের বশবর্তী হয়ে আমার সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মানহানিকর হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সে প্রেক্ষিতে আমরা পর্যালোচনা করেছি। ভবিষ্যৎতে মামলা হলেও হতে পারে।’
সাবেক ও বর্তমান মেয়রের মধ্যে এ ধরনের বাকবিতণ্ডা ‘জনগণ খুব হাস্যকর হিসেবে নিচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন শেখ তাপস। এ বিষয়টি নিয়ে আজকের পর আর কোনো মন্তব্য করবেন না বলেও জানান মেয়র।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের টাকা নিজের মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে রাখার বিষয়ে সাঈদ খোকনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের নিয়ম মেনেই মধুমতি ব্যাংকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের টাকা রাখা হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। আমি মেয়র পদে আসার আগে থেকে মধুমতি ব্যাংকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের টাকা রাখা হচ্ছে।’
গত শনিবার হাইকোর্ট এলাকার কদম ফোয়ারার সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে সাঈদ খোকন অভিযোগ করেন, মেয়র তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি লাভ করেছেন এবং করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, ২য় ভাগের ২য় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
মানববন্ধনে সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাকে বলব, রাঘববোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। তারপর চুনোপুঁটির দিকে দৃষ্টি দিন।’
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মানহানির দুটি মামলার আবেদন করেন কাজী আনিসুর রহমান ও মো. সারোয়ার আলম নামে দুই ব্যক্তি। আদালত মামলা দুটির ব্যাপারে আগামী ১৯ জানুয়ারি আদেশ দেবে বলে দিন ধার্য করেছে।